খালেদা জিয়ার বায়োপিক ‘আপসহীন’, অভিনয়ে নিপুণ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০২৪, ১৭:০৮
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন এম কে জামান। সিনেমার নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’। পরিচালক সমিতিতে সিনেমাটির নামও নিবন্ধন করেছেন পরিচালক। প্রযোজনা করছে আকন্দ এন্টারটেইনমেন্ট পিএলসি। সিনেমাটির নির্মাতা জানিয়েছেন, সিনেমাটি নির্মাণের আগে আমরা খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়েছি।
তবে খালেদা জিয়াকে নিয়ে কাউকে কোনো প্রকার সিনেমা বা ডকুমেন্টরি বানানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘোষণা দেয় বিএনপি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি জানায়, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কোনো সিনেমা বা ডকুমেন্টরী বানানোর কোনো প্রকার অনুমতি জিয়া পরিবারের কোনো সদস্য কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন কিংবদন্তি গীতিকার-প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। যেটির শিরোনাম ‘আপসহীন’। আর এ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।
জানা যায়, চলচ্চিত্রটি আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক। এক দশক আগেই, অর্থাৎ ২০১৩ সালে গোপনে এর শুটিং সম্পন্ন হয়েছিল। তখন প্রধান বিরোধীদল ছিল বিএনপি। তবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত অস্থিরতার দিকে ধাবিত হলে সিনেমাটির বিষয়ে গোপন রাখা হয়। এবার ১১ বছর পর তা আলোর মুখ দেখতে চলেছে।
২০২২ সালে মারা যান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ছবিটি নিয়ে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল বলে জানা গেছে। বাবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ছবিটি শিগগিরই মুক্তি দিতে চান গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে সরফরাজ আনোয়ার উপল।
তিনি বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবেও উদ্যোগ নিয়েছি বাবার সব সৃষ্টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। বাবার নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র এটি। দর্শক দেখলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে। এটা শুধু যে একটা চলচ্চিত্র তা কিন্তু নয়, একই সঙ্গে সফল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক। দেখলে দর্শক জানতে পারবে দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা, ত্যাগ ও মহিমার কথা।’
সিনেমাটিতে বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হেলাল খান। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছিল এর দৃশ্যধারণের কাজ। তখন দ্রুত পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ সম্পন্ন করে সেন্সরে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন অভিনেতা।
এমন সময়েই গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এই কর্মী। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস’র নেতা। পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (৫ জানুয়ারি) আগে ছবিটি সারাদেশে মুক্তি দেবেন। কিন্তু হেলাল খান জেলে থাকায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার সিনেমাটি মুক্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
অন্যদিকে, ব্যক্তিজীবনে আওয়ামী লীগের সমর্থক নিপুণ আক্তার। সিনেমায় যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের ঘটনা জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একদিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আমার বাসায় আসেন। এর কথা জানালেন। তখন শাহ আলম কিরণ ভাইয়ের “৭১-এর মা জননী”র শুটিং চলছে। আমাকে আঙ্কেল বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে “আপসহীন”। আমাকে তার চরিত্রেই রূপদান করতে হবে।
জানতে চাইলেন, আমার আপত্তি আছে কি না। জানালাম, অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডামের চরিত্রে অবশ্যই অভিনয় করা উচিত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে রাজপথে সরব। আমি রাজি হওয়ায় আঙ্কেল খুব খুশি হলেন। জানালেন, আমার আগে জয়া আহসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশার কথা উঠেছিল। তবে গাজী আঙ্কেলই হেলাল ভাইকে বলেছিলেন, নিপুণ হলে ম্যাডামের চেহারার সঙ্গে দারুণ মিলবে।’
শুটিংয়ের আগে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অনেক পড়াশোনাও করেছেন নিপুণ। গাজী মাজহারুল আনোয়ারই তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। নিপুণ বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আঙ্কেলের (গাজী মাজহারুল আনোয়ার) প্রতি। আজ তিনি বেঁচে নেই, তবে তার সৃষ্টি আছে। আশা করছি, হেলাল ভাই দ্রুত ছবিটি মুক্তি দেবেন। আমিও তার সঙ্গে যোগাযোগ করব।’
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।