দৃপ্ত স্লোগান আর তৃপ্ত শেষ চুমুকে জেগে থাকবেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়
রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩:৪১

অথৈ সাগরে ডিঙ্গা ভাসালেন গণগায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাংলার মায়াভরা পথে তিনি আর কখনও হাঁটবেন না। কিন্তু তার দৃপ্ত স্লোগান আর তৃপ্ত শেষ চুমুকে জেগে থাকবে বাংলা।
ছোকরা চাঁদ জোয়ান চাঁদ-এর স্রষ্টা প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। যারা বাংলা গান, বিশেষত গণসঙ্গিত ভালোবাসেন তাদের প্রিয় শিল্পী তিনি। আলু বেচো ছোলা বেচো- গানটি দিয়ে মানুষের স্বপ্নকে না বেচবার আহ্বান জানান প্রতুল মুখোপাধ্যায়।
আমি বাংলায় গান গাই- আজও শোনা যায় দেশপ্রেমিক মানুষের মুখে মুখে। পাশাপাশি ডিঙা ভাসাও সাগরেও দারুন পছন্দ বাংলা গানপ্রেমীদের কাছে। গান গাওয়া, লেখা, সব ক্ষেত্রেই নিজের প্রতিভার জাত চিনিয়েছেন এ কিংবদন্তি। প্রথাগত সংগীতশিক্ষা না থাকলেও সংগীতের ওপর তার দখল ছিল শক্তিশালী। হৃদয় আবেগকেই সুর ও কথার মেলবন্ধনে বেঁধে ফেলতেন তিনি।
তাঁর জীবনের প্রথম অ্যালবাম বের হয় ১৯৮৮তে। সেটা হল পাথরে পাথরে নাচে আগুন। যদিও এটা তাঁর একক অ্যালবাম নয়। প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম বের হয় ১৯৯৪ সালে- যেতে হবে। আর তাঁর শেষ অ্যালবাম- ভোর বের হয় দুহাজার বাইশে।
তার অনেক সৃষ্টির মধ্যে আমি বাংলায় গান গাই- গানটি বিশেষভাবে সমাদৃত। গানটি ২০১১ সালের মার্চে প্রকাশিত হয়। ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ-এর মতো আরো অনেক জনপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়েছেন।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪২এর ২৫ জুন, অবিভক্ত বাংলার বরিশালে। তাঁর বাবা প্রভাতচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। তাঁর মা বাণী মুখোপাধ্যায় প্রতুলকে নিয়ে দেশভাগের পরে এপার বাংলায় চলে আসেন। এখানে তারা থাকতেন চুঁচুড়ায়। দীর্ঘ রোগভোগের পর শনিবার ভোরে তাঁর গানের পঙ্ক্তি মেনেই যেন অচেনা সাগরে ডিঙ্গা ভাসালেন এ গানের পাখি। বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
যতদিন বাংলার কৃষ্টি থাকবে ততদিন থেকে যাবে তাঁর গাওয়া আমি বাংলায় গান গাই-এর মতো অসাধারণ সব গান। শিল্পীর প্রয়াণ হলেও থেকে যাবে তাঁর অসামান্য সৃষ্টির মৌতাত। যতদিন বাঙালি শ্রোতা থাকবে এই পৃথিবীতে বেজে চলবে তার গান। থেকে যাবে তার গানের অমোঘ অনুরণন।
বিষয়: প্রতুল মুখোপাধ্যায়
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।