এরশাদের জেনারেল থেকে রাজনীতিক হিসেবে উত্থান ও আস্থার সংকট
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৪৫
বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদের নয় বছরের শাসনের পতন হলেও তিনি রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছেন। তিনি সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর জাতীয় পার্টি নামে দল গঠন করেন। তবে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে অন্য সব দলের বিরোধীতার বিষয়টি ছিল তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। দেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করাসহ কিছু সংস্কারের পদক্ষেপ নিলেও তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি।
জেনারেল এরশাদের শাসনের সময় ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনা হয়। শেষপর্যন্ত তাঁর সরকারের পতনের পর তিনি জেলে গিয়েও সবদলের অংশগ্রহণে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এবং সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৩৫টি আসন পেয়ে ভোটের রাজনীতিতে একটা প্রভাব ফেলেছিল।
জেনারেল এরশাদের ঘনিষ্ট ছিলেন এমন একজন রাজনীতিক , যিনি পরে অন্য দলে গেছেন, তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদকে যখন ক্ষমতা ছাড়তে হয়, তখন তাঁকে বিদেশে চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি জেলে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেলেন। এটি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল বলে ঐ রাজনীতিক মনে করেন।
তিনি উল্লেখ করেছেন, "জেনারেল এরশাদ বিদেশে না গিয়ে দেশে ছিলেন বলেই পরে রাজনীতিতে টিকে গেছেন।" বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, প্রায় তিন দশক ধরে দেশের ভোটের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির একটা প্রভাব থাকলেও বিভিন্ন সময় জেনারেল এরশাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে দলটি আস্থার সংকটেও পড়েছে।
এরশাদ উকিল হতে চেয়েছিলেন
জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জন্মগ্রহণ করেন রংপুরে তাঁর নানার বাড়িতে ১৯৩০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি। তবে তাঁর শৈশব এবং স্কুলজীবন কেটেছে বাবা মা'র সাথে ভারতের কুচবিহারের দিনহাটায়।সেখান থেকেই তিনি এসএসসি পাস করেছেন। স্কুল শেষ করে তিনি রংপুরে কারমাইল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন।
তাঁর ভাই এবং জাতীয় পার্টির নেতা জি এম কাদের জানিয়েছেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী নেয়ার পর উকিল হওয়ার চিন্তা থেকে ল'কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু আইন পড়া শেষ হওয়ার আগেই ১৯৫২ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি পেয়ে তাতে যোগ দেন।
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পরিবারিক আরেকটি নাম ছিল
তাঁর বাবা-মা এবং ভাই বোন বা কাছের আত্নীয়রা তাঁকে পেয়ারা নামে ডাকতেন। এটি তাঁর ডাক নাম। জি এম কাদের জানিয়েছেন, তাদের চার ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিলেন মেজো। সবার বড় বোনের নাম ছিল পেয়ারী এবং সেই নামের সাথে মিলিয়ে মি: এরশাদের পরিবারে নাম ছিল পেয়ারা। তাদের এক ভাই এবং দুই বোন আগেই মারা গেছেন।
মি: কাদের বলেছেন, তাদের বাবা মকবুল হোসেন পেশায় আইনজীবী ছিলেন এবং তিনি বাড়ি করেছিলেন কুচবিহারের দিনহাটায়। আর তাদের মা মজিরা খাতুন গৃহিনী ছিলেন।সেকারণে কুচবিহারের দিনহাটাতেই তাঁর বেড়ে ওঠা।
জেনারেল এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির নেত্রী এবং গত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। নানা গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে ২০০০ সালে জেনারেল এরশাদ একজন ফ্যাশন ডিজাইনার বিদিশা ইসলামকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর এই নারী বিদিশা এরশাদ নামে পরিচিত হন। তবে সেই ঘর বেশি দিন টেকেনি।
জেনারেল এরশাদের ছাত্রজীবন কেমন ছিল?
জি এম কাদের জানিয়েছেন, তাঁর ভাই মি: এরশাদের খেলাধূলায় আগ্রহ বেশি ছিল। তিনি ছাত্রজীবনে ফুটবলার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তখন ফুটবল জনপ্রিয় খেলা ছিল।
স্কুল এবং কলেজ জীবনে মি: এরশাদ রংপুর অঞ্চলে বিভিন্ন ক্লাবে ভাড়ায়ও ফুটবল খেলতে যেতেন। এছাড়া তিনি তখন থেকেই কবিতা লিখতেন এবং কারমাইকেল কলেজের সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছিলেন বলে জি এম কাদের জানান।
জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত পত্রিকা দৈনিক বাংলায় তাঁর অনেক কবিতা ছাপা হয়েছিল। তা নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলোচনা ছিল। তিনি আত্মজীবনী লিখেছেন। সেই বইয়ের নাম, ''আমার কর্ম আমার জীবন''। এছাড়া তিনি কয়েকটি কবিতার বইও বের করেছেন।
এরশাদের ক্ষমতা দখল
১৯৮১ সালের ৩০শে মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। সে সময় জেনারেল এরশাদ সেনাপ্রধান ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সে সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন এবং তাঁর নেতৃত্বে বিএনপিরই সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু সেই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
সে সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ে উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা ছিলেন, বেশ আগে অবসর নেয়া সেই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের দু'মাস পরই জেনারেল এরশাদ কয়েকজন জেনারেলকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে মন্ত্রীদের ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন এবং এভাবে দেশ চলতে পারে না বলে বার্তাও দিয়েছিলেন।
সাবেক ঐ সেনা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, বিচারপতি সাত্তারকে বার্তা দেয়ার পর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। শেষপর্যন্ত ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ জেনারেল এরশাদ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন।
জেনারেল থেকে তাঁর রাজনীতিক হওয়ার গল্প
ক্ষমতা দখলের পর দেশে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে তিনি বাংলাদেশে দ্বিতীয় বারের মতো সামরিক শাসন জারি করে নিজেকে প্রধান সামরিক শাসক হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি নতুন এক শ্লোগান চালু করেছিলেন, সেটি ছিল ''নতুন বাংলাদেশ, গড়ব মোরা...।''
তিনি তাঁর সেই শ্লোগান দিয়ে গানও লিখেছিলেন। তবে তাঁর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্র্রতিবাদ করেছিলেন ছাত্ররা। ১৯৮২ সালেই ১১ই সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবসকে কেন্দ্র করে মজিদ খানের প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছিল। সে বছরই নভেম্বরে তৈরি হয়েছিল সব ছাত্র সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ ফোরাম ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ।
পরের বছর ১৯৮৩ সালের ১৪ এবং ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্ররা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নামলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছিল।
জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনে সেই প্রথম রক্ত ঝরেছিল ঢাকার রাজপথে। এরপরও তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলন গড়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। জেনারেল এরশাদ আন্দোলন দমনের চেষ্টার পাশাপাশি নিজে রাজনীতিক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তৎপর হলেন।
তিনি ১৯৮৬ সালের শুরুতে বিভিন্ন দল থেকে মিজানুর রহমান চৌধুরী, শাহ আজিজ এবং মওদুদ আহমেদসহ অনেক রাজনীতিককে নিয়ে জাতীয় পার্টি নামের দল গঠন করেন। সেই দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে তিনি নির্বাচন দিয়ে রাষ্ট্রপতি হন। এরই মাঝে রাজনৈতিক দলগুলো তাঁর বিরুদ্ধে যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করেছিল।
জেনারেল এরশাদ তখন সেই ১৯৮৬ সালে সংসদ নির্বাচন করেছিলেন। সেই সংসদ মাত্র এক বছর টিকেছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি মূল ধারার দলগুলোর বয়কটের মুখে একতরফা নির্বাচন করলেও তিনি বেশিদিন টিকে থাকতে পারেননি।
দুই বছর পরই আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং বামপন্থী দলগুলোর অর্থ্যাৎ তিনি জোটের গণআন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদের শাসনের পতন হয়। তাঁর শাসনের সময় আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অনেকে নিহত হয়েছে।
তাদের মধ্যে নূর হোসেন এবং ডা: মিলনের নাম এখনও মুখে মুখে উচ্চারিত হয়। জেনারেল এরশাদের পতনের দিনটি স্বৈরশাসকের পতন দিবস হিসেবে এখনও বিভিন্ন দল ও সংগঠন পালন করে থাকে। তিনি মোট নয় বছর ক্ষমতায় ছিলেন।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম
জিয়াউর রহমান যেমন ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তার আদলে জেনারেল এরশাদ ১৮ দফা উন্নয়নের কর্মসূচি নিয়ে রাজনীতিতে নেমেছিলেন। তিনি ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলেছিলেন এবং দেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি।
হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালতকে রাজধানী ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগীয় শহরগুলোতেও স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, বিরোধীতার মুখে সেই উদ্যোগও ব্যর্থ হয়। তাঁর সময়ই প্রথম উপজেলা এবং জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছিল। তাঁর ক্ষমতার শেষদিকে উপজেলা নির্বাচনও হয়েছিল।
তাঁর এই পদক্ষেপগুলোকে বিশ্লেষকদের অনেকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁর সময়ে ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনা হয়েছিল। তখন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি-প্রধান দুই দলই এর বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু পরে কোন দলই আর এর পরিবর্তন করেনি।
এরশাদ সরকারের একজন প্রভাবশালী নেতা, যিনি এখন অন্য রাজনৈতিক দলে আছেন, তিনি বলেন যে রাজনৈতিক সংকট সামাল দেবার জন্য একটি কৌশল হিসেবে মি: এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করেন।
রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব
জেনারেল এরশাদের শাসনের পতনের পর তাঁকে জেলে নেয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা এবং দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডজনখানেক মামলা হয়েছিল। ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র আবার ফিরে আসার পর তিনি জেলে থেকেই সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর দল জাতীয় পার্টি ৩৫টি আসন পেয়েছিল। তিনি রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপরের সংসদ নির্বাচনগুলোতে তিনি নিজে কখনও পরাজিত হননি।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর তিনি জেলে থেকেই আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনের জন্য সমর্থন দিয়েছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ছয় বছর জেল খাটার পর জেনারেল এরশাদ জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।
তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলোর কয়েকটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। কোনটিতে খালাসও পেয়েছেন। এসব মামলার কারণে তিনি স্বাধীন অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করতে পারেন নি। জাতীয় পার্টি কয়েকটি ভাগে বিভক্তও হয়েছে। এরপরও ভোটের রাজনীতিতে তাঁর দল জাতীয় পার্টির একটা অবস্থান তৈরি হয়। রংপুর অঞ্চলের ১৭টি আসনে জাতীয় পার্টির ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
নির্বাচন এলেই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি - প্রধান দুই দলই তাঁকে সাথে নেয়ার চেষ্টা করে। তবে গত কয়েকটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের সাথেই থাকতে হয়েছে। জাতীয় পার্টি গত কয়েকটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে জোট থেকে অংশ নিয়েছে। যদিও দলটি তাদের দলীয় প্রতীক লাঙল নিয়ে লড়েছে।
আস্থার সংকট
জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে টিকে গেলেও জেনারেল এরশাদ এবং তাঁর দল নিয়ে মানুষের মাঝে আস্থার কিছুটা অভাব আছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের সময় জেনারেল এরশাদ তাঁর বক্তব্য বা অবস্থান বার বার বদল করেছিলেন। ফলে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল।
গত দশম সংসদে তাঁর দলের তিনজন নেতা সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন এবং তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ছিলেন। একইসাথে তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ ছিলেন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা।
সর্বশেষ ২০১৮সালের ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক হিসেবে অংশ নিয়ে ২২টি আসন পায়। এরপর ৮৯ বছর বয়সে জেনারেল এরশাদ এই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হন এবং জাতীয় পার্টি বিরোধীদলের আসনে বসে।
জেনারেল এরশাদ তাঁর অনুপস্থিতিতে ছোট ভাই জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি উত্তরসূরি নির্ধারণ করতে গিয়েও কয়েকবার সিদ্ধান্ত বদল করেছেন। ২০১৯ সালের শুরুতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সময় জি এম কাদেরকে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান করে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন।
মাসখানেক পর চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেই জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে জেনারেল এরশাদ তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদকে তাঁর পরবর্তী অবস্থানে নিয়ে আসেন।
অল্প কিছুদিন পরই মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মধ্যরাতে জেনারেল এরশাদ হুইল চেয়ারে করে অসুস্থাবস্থায় সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে হাজির হন। তখন তিনি আবার জিএম কাদেরকে তাঁর উত্তসূরি হিসেবে ঘোষণা করেন। এনিয়ে দলটিতে জেনারেল এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ এবং ভাই জে এম কাদেরের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।