শেখ হাসিনার সাথে হত্যা মামলার আসামি সাংবাদিকরাও

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৬

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মো. আক্কাস আলীকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আসামির তালিকায় আছেন ২১ সাংবাদিকও। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খবরের কাগজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম। এর আগে গত বুধবার নিহতের ভাই আব্দুর রাজ্জাক মামলাটি করেন।

ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর তা নিয়মমাফিক কোর্টে পাঠানো হয়েছে। কোর্ট থেকে যাবতীয় কাগজপত্র আসার পর আমাদের কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে আমাদের জোনের ডিসি স্যারসহ মামলাটি নিয়ে কাজ করব। এ ছাড়া এ বিষয়ে আপাতত দেওয়ার মতো তেমন কোনো তথ্য নেই।’ তিনি বলেন, অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো আপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আসামি করা হয়েছে।

সাংবাদিকরা হলেন বাংলা টিভির নজরুল কবির, নিউজ২৪-এর রাহুল রাহা, ডিবিসির মঞ্জুরুল ইসলাম, কালের কণ্ঠের হায়দার আলী, দৈনিক কালবেলার আজমল হক ফরাজী, বাসসের স্বপন বসু, ভোরের কাগজের ইখতিয়ার উদ্দিন, যায়যায়দিনের অরুণ কুমার দে, বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবির, ডিইউজের নেতা খায়রুল আলম, ইউএনবির করিম ওয়াহিদ।

অন্যরা হলেন, নিউজ২৪-এর আশিকুর রহমান শ্রাবণ, ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ মুহম্মদ জামাল হোসাইন, সমকালের আবু সালেহ রনি, কালের কণ্ঠের সামনুনুল আলম তুষার, নিউজ২৪-এর জয়দেব দাস, সমকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, ডিবিসির জায়েদুল আহসান পিন্টু, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন। খবরের কাগজ, প্রথম আলো

এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ২৭ সাংবাদিকসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলীর রিং রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মিরপুর বিসিআইসি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র নাসিব হাসান রিহানের বাবা গোলাম রাজ্জাকের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী এমএইচ গাজী তামিম। ওই আইনজীবী জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ছোড়া গুলি রিহানের ‍মুখে, মাথায় ও ঘাড়ে লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগ সরকারের 'চাটুকার' এবং তৎকালীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানি দিতে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেন এবং এসব অপরাধকে বৈধতা দেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্য যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, হাসানুল হক ইনু, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, পুলিশের সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, আদাবর থানার ওসি মাহাবুব রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্ট নিঝুম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক মেজবাহ কামাল।

অন্যরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু, সাংবাদিক ও সঞ্চালক নবনীতা চৌধুরী, এবি নিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, সময় টিভির আহমেদ যোবায়ের, এখন টিভির বার্তাপ্রধান তুষার আব্দুল্লাহ, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সমকালের সাবেক সম্পাদক আবেদ খান, এটিএন নিউজের বার্তাপ্রধান প্রভাষ আমিন, একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপা, একাত্তর টিভির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ, একাত্তর টিভির মিথিলা ফারজানা, ডিবিসির সম্পাদক জায়েদুল হাসান পিন্টু, ডিবিসির প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম,

ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীস সৈকত, এশিয়ান টিভির হেড অব নিউজ মানস ঘোষ, ডিবিসির প্রণব সাহা, সাবেক তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি, এটিএন নিউজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা, এটিএন বাংলার সাবেক নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, চ্যানেল আইয়ের সোমা ইসলাম, ইত্তেফাকের শ্যামল সরকার, সমকালের অজয় দাশ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আবেদনে বলা হয়েছে, এসব সাংবাদিক আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার দাবি ও আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা খবর প্রচার-প্রকাশ করেছেন। তা ছাড়া আন্দোলনে নিহতদের তথ্য গোপন করে গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছেন। আন্দোলন চলা অবস্থায় এসব সাংবাদিক শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তাঁর সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ডেইলি স্টার, কালের কণ্ঠ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top