কাতারে হামাস প্রধান হানিয়াহকে আজ দাফন
মেহেদী হাসান | প্রকাশিত: ২ আগষ্ট ২০২৪, ১৪:৪১
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মরদেহ ইরান থেকে কাতারে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার (২আগস্ট) গ্যাস সমৃদ্ধ আমিরাতের বৃহত্তম ইমাম মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব মসজিদে জানাজা শেষে কাতারের রাজধানীর উত্তরে লুসাইলের একটি কবরস্থানে হানিয়াকে দাফন করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছায় হানিয়ার মরদেহ। এসময় মরদেহবাহী কফিন গ্রহণ করেন হামাসের সাবেক নেতা খালেদ মেশালসহ সংগঠনের কর্মীরা।
এর আগে ইরানের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নেতৃত্বে হানিয়ার প্রথম জানাজা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ অনেকে। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তেহরানের রাস্তায় প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ শোক মিছিল হয়। হামাস নেতার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে ইরানে।
গত মঙ্গলবার ইরানের রাজধানী তেহরানে যান ইসমাইল হানিয়া। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিনের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এরপর ওইদিন স্থানীয় সময় রাত ২টা নাগাদ হত্যার শিকার হন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান হানিয়া। এ সময় তাঁর এক দেহরক্ষীও নিহত হন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হানিয়ারর জন্য প্রার্থনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এর আগে তাকে হত্যার জন্য ‘কঠোর শাস্তির’ হুমকি দিয়েছেন।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডস জানিয়েছে, বুধবার ভোরের আগে তেহরানে তাদের বাসস্থানে হামলায় হানিয়াহ এবং একজন দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। এর আগে, মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি ইরানে গিয়েছিলেন। হামলার জন্য হামাস ও ইরান এবং অন্যরা ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে, তবে ইসরাইল সরাসরি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইসরাইল বৈরুতের দক্ষিণে একটি শহরতলিতে হামলা চালিয়ে হামাসের সহযোগী লেবানিজ গ্রুপ হিজবুল্লাহর সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা পরে হানিয়াকে হত্যা করা হয়। গাজা যুদ্ধের সময় সিরিয়া, লেবানন, ইরাক এবং ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে টানা আঞ্চলিক উত্তেজনা বেড়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক অনেকগুলো হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বশেষ ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ইসমাইল হানিয়া ইরানের রাজধানী তেহরানের যে গেস্টহাউসে অবস্থান করছিলেন সেখানে দুই মাস আগে একটি বোমা লুকিয়ে রাখা ছিল। এরপর হানিয়া যখন মঙ্গলবার সেখানে যান তখন রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
গেস্টহাউসটি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) ছিল। সেখানে চোরাই পথে বোমা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আইআরজিসির দুই কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সালে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাকরিজাদেহকে নিখুঁতভাবে রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগান দিয়ে যেভাবে হত্যা করেছিল, ইসমাইল হানিয়াকে সেই একই উপায়ে হত্যা করা হয়েছে।
তুরস্ক এবং পাকিস্তান হানিয়ার সম্মানে শুক্রবার একদিনের শোক দিবস ঘোষণা করেছে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।