মুজিববর্ষেই বঙ্গবন্ধুর আরো এক খুনিকে ফেরানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বঙ্গবন্ধুর পলাতক পাঁচ খুনির অন্তত একজনকে মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় তিনি বলেন, আমি ওয়াদা করছি, মুজিববর্ষের মধ্যে আরও একজন খুনিকে দেশে এনে শাস্তির মুখোমুখি করব। এটা এখন জনগণেরও প্রত্যাশা।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা ছাড়া পেয়ে যায়।

২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে। তখন বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচারের গতি শ্লথ হয়ে যায়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচার শেষে ২০১০ সালে পাঁচ খুনির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ গত এপ্রিলে পলাতক আবদুল মাজেদ ধরা পড়লে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার বিচারের রায় কার্যকর করা হয়।

তবে দণ্ডিত পাঁচ খুনি এখনও বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন। তারা হলেন- আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও এবিএমএইচ নূর চৌধুরী।

তাদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরীর কানাডায় অবস্থানের খবর সবার জানা। তাদের ফেরত পাঠাতে বহু বছর ধরেই দুই দেশের সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ১২ জন খুনির ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৬ জনকে দেশে এনে শাস্তির সম্মুখীন করেছি। একজন তো আগেই মারা গেছেন। বাকি ৫ জনের মধ্যে আমাদের প্রার্থনা ছিল যে মুজিববর্ষের মধ্যে অ্যাট লিস্ট একজনকে দেশে এনে বিচারের সম্মুখীন করা।

মার্কিন সাময়িকী পলিটিকো গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানায়, রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এর চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক আশ্রয় হারাতে পারেন এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

সেই প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইমিগ্রেশন পেয়ে গেছিল, এখন সেটা রিভিউ হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, আরেকজনকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে পারব।

আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে কয়েক লক্ষ সিগনেচার মুখোমুখি সংগ্রহ করতে পারি, তাহলে ইস্যুটা আরও শক্তিশালী হবে। আমি সরকারিভাবে চেষ্টা করছি, এখন জনতার সাহায্য চাই।

দণ্ডিত আরেক খুনি মোসলেম উদ্দিন সম্প্রতি ভারতে ধরা পড়েছেন বলে সেদেশের গণমাধ্যমে খবর এলেও তার সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। রশীদ ও ডালিম কোথায় আছেন, সেই তালাশ এখনও পাননি দেশের গোয়েন্দারা।

জনতার প্রত্যাশা নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই সংগঠনের সভাপতি এম এ করিম।

এনএফ৭১/আরআর/২০২০



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top