চা শ্রমিকরা সবসময় নৌকায় ভোট দেন

চা-শ্রমিকদের বাসস্থান করে দেওয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৫৯

প্রধানমন্ত্রীর  ভিডিও কনফারেন্স

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছুদিন আগে আন্দোলন হয়েছে। আমি সেই সময় মালিকদের সঙ্গে বসে আপনাদের দৈনিক মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমার মনে হয় সেখানে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী করতে পেরেছি।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।

সরকার চা শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, চা শ্রমিকরা আমাদের দেশেরই নাগরিক। কিন্তু এক সময় তাদের নাগরিকত্ব ছিল না। ঘরবাড়ি ছিল না। যেহেতু চা শ্রমিকরা সবসময় নৌকা মার্কায় ভোট দেন, সেহেতু আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সমস্যাগুলো দূর করতে।

তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশরা আপনাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিল। তখন আপনাদের কোনও নাগরিক অধিকার ছিল না। কোনও সুযোগ-সুবিধা ছিল না। আজ আপনারা এদেশের নাগরিক। বঙ্গবন্ধু আপনাদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। তার কন্যা হিসেবে আপনাদের প্রতি আমার একটি দায়িত্ব রয়েছে। মালিকরা যাতে আপনাদের যথাযথভাবে মর্যাদা দেয় ও দেখে সেই উদ্যোগ নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, চা শিল্প আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। চা বাগান দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এই চা শিল্প আমাদের অর্থখাতের জন্যও ভীষণ দরকারি। তাই এই চা শিল্প যেন ধ্বংস হয়ে না যায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য আমি আমার সব চা শ্রমিক ভাইদেরও অনুরোধ জানাবো এই চা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

চা-শ্রমিকদের দেওয়া স্বর্ণের চুড়ি উপহার পাওয়া প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা গণভবনে আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উপহার নিয়ে এসেছিলেন। সেই উপহার এখনও আমি হাতে পরে বসে আছি। আমি কিন্তু ভুলিনি। আমার কাছে এটা হচ্ছে সব থেকে অমূল্য সম্পদ। চা-শ্রমিক ভায়েরা চার আনা আট আনা করে জমিয়ে আমাকে এই উপহার দিয়েছেন। এত বড় সম্মান, এতবড় উপহার আমি আর কখনও পাইনি।

এরআগে, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে টানা ২০ দিন কর্মবিরতি পালন করেন চা শ্রমিকরা। পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ১৭০ টাকা মজুরিতে কাজে ফিরেন তারা।

দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ অগাস্ট থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন দেশের ২৪১টি চা বাগানের প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক। প্রথম চারদিন শ্রমিকরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর ১৩ অগাস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা।

এরপর ২৭ অগাস্ট গণভবনে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের পর নতুন মজুরির ঘোষণা আসে। এরপর শ্রমিকরা নিজ নিজ বাগানে কাজে ফিরেছেন।

চা-শ্রমিকরা তাদের সুখ-দুঃখ ও দাবি দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার দাবির প্রেক্ষিতে আজ শনিবার এই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top