বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ, থমথমে নয়াপল্টন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:৩১

থমথমে নয়াপল্টন

১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এর মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনা। এ ঘটনার পর রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আছে। এলাকাজুড়ে রয়েছে পুলিশের উপস্থিতি।

কার্যালয়ের সামনের রাস্তার দুই পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া পথচারীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

পথচারীদের পরিচয় নিশ্চিত করে প্রবেশ করতে দিচ্ছে পুলিশ। ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি করা হচ্ছে। পরিচয় নিশ্চিত না হলে ব্যারিকেড থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‌আজ ভোর থেকেই পল্টন এলাকায় কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত শুধু চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া এবং এই রাস্তা ব্যবহারের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

কতদিন এই অবস্থা চলমান থাকবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট দিন-তারিখ নেই। তবে ১১ ডিসেম্বরের আগে এখান থেকে পুলিশ সরানো হবে না।

এরআগে, বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নেতা-কর্মীদের ভিড়ে রাস্তা বন্ধ হওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির ১ জন নিহত হয়েছেন। কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া, সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। সংঘর্ষের পরে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে‌ অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় কার্যালয়ের ভেতরে ও সামনে থেকে তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন আছেন।

পরে মির্জা ফখরুল কার্যালয়ের সামনে আসেন। প্রথমে তাকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে বাধা দিলেও পরে যেতে দেওয়া হয়। তবে মির্জা ফখরুল সেখানে না ঢুকে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। রাত ৮টার দিকে তিনি স্থান ত্যাগ করেন।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি করবে বিএনপি। বুধবার রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশস্থল নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। দলটি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ না করার ব্যাপারে অনড়। বিকল্প স্থান হিসেবে তারা আরামবাগ, জাতীয় ঈদগাহে যেতে রাজি।

তবে সরকার বলে আসছে, কোনোভাবে রাস্তার ওপর বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প হিসেবে তারা উন্মুক্ত কোনো মাঠ চাইলে দেওয়া হবে। সমাবেশের স্থান নিয়ে দুইপক্ষ ভিন্ন মেরুতে অবস্থানের মধ্যে নয়াপল্টনে গতকাল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top