প্রত্যাশা ঘুরে দাঁড়ানোর

বঙ্গবাজারে চৌকি বসিয়ে বেচাবিক্রি শুরু

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২৩, ২২:৫৪

চৌকি পেতে ব্যবসা শুরু

ঈদের আর মাত্র ১০ থেকে ১১ দিন বাকি। ঈদের আগে পুড়ে যাওয়া স্বপ্ন নতুন করে বুনছেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা। অবশেষে চৌকি বসিয়ে অস্থায়ীভাবে বেচা-কেনা শুরু করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে বেচা-কেনা শুরু করেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদেরকে দোকান দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তবে কিভাবে দেবে সেটি জানি না। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি তাতে আরও দুই তিন দিনে দোকান পাবো কিনা সন্দেহ রয়েছে। যদি সুষ্ঠুভাবে দোকান বণ্টন না করা হয় তাহলে বিশৃঙ্খা হবে, হাতাহাতি হবে। আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দিলে সবার জন্যই ভালো হতো।

তবে জানা গেছে, প্রত্যেক দোকানি চৌকি পাবেন। এ ক্ষেত্রে মার্কেটটিতে এক বা একাধিক দোকান থাকলেও প্রত্যেকে চৌকি বরাদ্দ পাবেন একটি করে। এদিকে বুধবার বঙ্গবাজারের নিচ তলা ও দ্বিতীয় তলার বরাদ্দ দেয়া হলেও তৃতীয় তলার দর্জির দোকানিরা কোথায় বসবেন তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে ছোটো ছোটো চৌকি বসানো হয়েছে। চৌকির ওপর বিক্রির জন্য মালামাল গোছাতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। অনেকে আবার ছাতা মাথায় বেচাকেনা শুরু করেছেন। অনেক ব্যবসায়ী মাথায় করে চৌকি নিয়ে আসছেন। ঈদ সামনে রেখে দ্রুত ব্যবসা শুরু করতে তাদের এই কর্মযজ্ঞ।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তহবিলে সোমবার পর্যন্ত ২ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা পড়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, এই তহবিলের পুরো টাকা সরকারের কাছে যাবে। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটা বড় অনুদান আসবে। সব মিলিয়ে এই টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরকারি উদ্যোগেই বণ্টন করা হবে।

বঙ্গবাজারের দোকান মালিক সমিতির নেতাদের ভাষ্য, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ১ দশমিক ৭৯ একর জমি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের বসাতে সেখানে বালু ফেলে ইট বিছানো হয়েছে। পুরো এলাকায় বালু ফেলা ও ইট বিছানোর কাজ করে চলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।

তবে বঙ্গবাজার আদর্শ মার্কেট ইউনিটের সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী বলেন, জায়গা সংকটের কারণে সর্বসাকল্যে ১ হাজার থেকে ১২০০ চৌকি মার্কেটের জায়গায় বসানো যাবে বলে মনে হচ্ছে।

‘সেইক্ষেত্রে ১০০ চৌকি দিয়ে ২০০ জনকে পুনর্বাসিত করা যায় কিনা আমরা দেখব। আর যারা বসার জায়গা পাবে না, তাদের বিষয়ে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শাহ আলম চৌধুরী জানান, তাদের ইউনিটে মোট দোকান ছিল ৬৭১টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১০০ চৌকি বসানো যাবে।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩০৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেছে কমিটি। আর পণ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৮৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ২২২ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

গত ৪ এপ্রিল সকালে বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনা, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সম্মিলিত চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা। কিন্তু তার আগেই আগুনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হন বঙ্গবাজারের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top