বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ফের শীর্ষে ঢাকা
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২ মে ২০২৩, ২০:২৬
ফের বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে রাজধানী ঢাকা। মঙ্গলবার (২ মে) সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ১৭৫।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। এতে অস্বাস্থ্যকর শহরের তালিকায় ঢাকার পরেই আছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা (১৭৩)। এরপরের স্থানগুলোতে ছিল মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, পাকিস্তানের লাহোর, আরব আমিরাতের দুবাই, চীনের উহান এবং বেইজিং।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। আর ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে বলেছে, ঢাকার বায়ু দূষণের ৩টি প্রধান উৎস হল- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
তবে, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতে, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক বলছে, দিনে ২টি সিগারেট খেলে মানবদেহের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিদিন সেই পরিমাণ ক্ষতির শিকার হন রাজধানীবাসী। এ ক্ষেত্রে নবজাতক থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ষাটোর্ধ্বরা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
বায়ুদূষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বায়ুদূষণের উৎসগুলো বেশি সক্রিয় থাকে। আবার এ সময় আবহাওয়াগত কিছু বিষয় থাকে, যেগুলো এ দূষণ বাড়ায়।
যেমন এ সময় আর্দ্রতা বেড়ে যায়, তাপমাত্রা কমে যায়, বায়ুর চাপ বেশি থাকে। যদি দূষণের উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে, তবে দূষণ কমতে পারে। কিন্তু ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে উৎসগুলো নিয়ন্ত্রণের কোনো তৎপরতা দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—শুষ্ক মৌসুমের এ ৪ মাসে বছরের ৬০ ভাগের বেশি বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আবার জানুয়ারিতে দূষণের পরিমাণ থাকে সবচেয়ে বেশি।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।