দুর্নীতির কারণে জনজীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৩ মে ২০২৩, ২৩:৪৯
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশ এখন প্রায় ধ্বংস রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে। অর্থনীতিতে ব্যর্থতার কারণে জনগণের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে। বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ব্যাংকগুলোকে পুরোপুরিভাবে খালি করে অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত সবকিছুতেই একটি নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের ন্যূনতম যে অধিকার- ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, আমাদের স্বাধীন মতপ্রকাশের যে অধিকার তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের একটি মাত্র উদ্দেশ্য, তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আবারও প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। আমরা নির্বাচনকালীন সময় দেখেছি এখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে জনগণ ভোট দিতে পারে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে সেই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি।
সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যারা আমাদের সহযোগিতা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। আজকে কর্নেল অলি আহমেদ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছেন। আজকের আলোচনা শেষ নয়। আবার তার দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করব।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলন।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না, ঘরে বাইরে কোথাও তারা শান্তিতে থাকতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। সাংবাদিকরাও লিখতে পারে না, কারণ আইন করে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে অলি আহমদ বলেন, তারা চাচ্ছে যেকোনোভাবে একটি নির্বাচন করার জন্য। আমরা চাই এ নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণ থাকবে। অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। এই দাবিগুলো নিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগও আন্দোলন করছে, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে অস্বীকার করার সুযোগ নেই কারণ একদিন তাদের দাবিও এটাই ছিল।
আমরা চাই প্রত্যেকে তাদের নিজের ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। আগামীতে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এ দেশ পরিচালনা করবে। তাহলে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি পাবে দেশ, সামাজিকভাবে আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারব।
কর্নেল অলি বলেন, আমরা চাই এ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। এই দাবিগুলো নিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগও আন্দোলন করছে, এটা নতুন কোনও বিষয় নয়। এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে অস্বীকার করার সুযোগ নেই, কারণ একদিন তাদের দাবিও এটা ছিল। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।