খালেদা জিয়ার চিন্তার দৈন্য আছে, তিনি স্বার্থপরতায় ভোগেন
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৩৮
বিএনপি চেয়েরপার্সন খালেদা জিয়ার চিন্তার দৈন্য আছে এবং তিনি স্বার্থপরতায় ভোগেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৬ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি দেশের ৬৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি আই সেন্টারের উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সমাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সরকারের বাস্তবায়ন করা কমিউনিটি ক্লিনিক বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিল অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যখন সরকার ক্ষমতায় ছিলাম তখন প্রায় ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রস্তুত করেছিলাম। এর মধ্যে চার হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালুও করেছিলাম। এর মাধ্যমে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সেসময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। কারণ তিনি মনে করতেন, এসব ক্লিনিকে যারা কাজ করবে বা চিকিৎসাসেবা নেবে তারা সবাই নাকি নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। নৌকা মার্কায় ভোট দেবে এই আশঙ্কায় তিনি মানুষের যে স্বাস্থ্য সেবা আমরা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম, সেটাই বন্ধ করে দেয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা যে ঘর দিচ্ছি। যে ভূমিহীন-গৃহহীন তাদেরকেই দিচ্ছি। কে কোন দল করে সেটা কিন্তু আমরা দেখছি না। আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করি। সেভাবেই তাদের সেবাটা দিই। কমিউনিটি ক্লিনিকেও তো আমরা সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোটের চিন্তার দৈন্যতা আছে। তারা স্বার্থপরতায় ভোগে এবং মানুষের কল্যাণ চায় না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে, অন্ধজনের বিলাও আলো, এ কাজটা করছি। সারা বাংলাদেশে অন্ধত্ব দূর করতে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ কমিয়েছি। আরও কমাতে কাজ করছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের জীবেনের চাহিদা, অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা, সেই সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে ২০০৯ থেকে উন্নয়ন করেছি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে এগুলো করতে পেরেছি। এজন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
জলাবদ্ধতা যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব যায়গায় পানি সরে যাওয়ার জন্য জলাধার রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদী নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো। এগুলো প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদীর-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যায়। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রত্যেক এলাকায় নদী খাল বিল হাওরের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছি। নদীপথগুলোও সচল করার পদক্ষেপ নিই।
বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, পানির হাহাকার অনেক জায়গায়। আমরা ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে উদ্বৃত্ত থাকলে রফতানি করতে পারবো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা অনেক ভর্তুকি দেই। এটারও ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন। পাশাপাশি নদী খাল বিল সব কিছু যেনো দূষণমুক্ত হয়, খেয়াল রাখবেন। যেকোনো প্রকল্প প্রণয়নে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখবেন। জলাধার রাখবেন।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।