নির্বাচনি ব্যবস্থা নষ্ট করেছে জিয়াউর রহমান
আন্দোলন করুন, তবে দুর্বৃত্তায়নে ছাড় নয়
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:২৮
জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশের বিচারকাঠামো গঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য সবকিছু তিনি করে গেছেন। সমুদ্র সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তিনি শুরু করেছেন। যা আমরা শুরু করেছি। আমি অবাক হয়ে যাই যে একজন মানুষ কীভাবে এক জীবনে এতগুলো কাজ করতে পারেন। শনিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবীদের মহাসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু ইনডেমনিটি অধ্যাদেশই নয়, নির্বাচনী ব্যবস্থা নষ্ট করা, হ্যাঁ-না ভোট, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, যেটা সামরিক আইন ও বিধান ভঙ্গ করে নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি বলেন, যে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা, যে স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি, সেই স্বাধীনতার স্বপ্ন আমরাই বাস্তবায়ন করেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি মাঠে নামতে চায়, জামায়াত এবং আরও অনেকেই। তারা আন্দোলন করুক, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু তারা যদি আবার কোনো রকম অগ্নিসন্ত্রাস বা ধ্বংসাত্মক কাজ করে, যদি তারা কোনোরকম দুর্বৃত্তপনা করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দেব না।কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে। যেটা আগে করেছিল, আগামীতে যেন করতে না পারে।
মানুষের কল্যাণে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিচার বিভাগ এবং আইনজীবীদের জন্য গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেন কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা না হয়। স্মার্ট জুডিশিয়ারি করার উদ্যোগ হিসেবে ই-জুডিশিয়ারি চালু করেছি। জেলে ভার্চুয়াল কোর্ট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইনগুলো সংশোধন করে যুগোপযোগী করে দেওয়া হয়েছে।
আগামীতে জেলায় জেলায় আইনজীবীদের জন্য বিশেষ প্লটের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ তাঁর সরকার নেবে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমি জানি একটি দাবি আছে, আইনজীবী ভবন করে দেওয়ার। আর্থিকভাবে যত সচ্ছলতা আসবে, ধীরে ধীরে সব জেলায় এটা করে দিতে পারব।
তবে এখানে একটা শর্ত আছে, সেখানে আইনজীবীদের পক্ষ থেকেও ফান্ড থাকতে হবে। আপনারা একটা ফান্ড গঠন করেন, সেখান আপনারাও কিছু দেন আমিও দেব। সঙ্গে সঙ্গে আমার একটি অনুরোধ থাকবে- আপনারা সর্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি আপনাদের কল্যাণ ফান্ড, যেটা জাতির পিতা করে দিয়েছেন, আমিও বিভিন্ন সময় দিয়েছি, সেটাতে আমি আরও ৩০ কোটি টাকা দেব। আপনারাও সাধারণ আইনজীবীরা এতে কন্ট্রিবিউট করবেন।
জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশে বিচারকাঠামোর গোড়াপত্তন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার নয় মাসের মাথায় কেবল একটি সংবিধানই আমাদের দেননি, ’৭২ সালে তিনি ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার’ জারি করেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করে তাদের জন্য ৪৪ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেন এবং ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে আইনজীবীদের কল্যাণ ফান্ড গঠন করে দেন। তিনিই পাকিস্তান আমলের আইন পরিবর্তন করে নারীদের বিচার বিভাগে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করে যান।
বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার ’৯৬-পরবর্তীতে ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে প্রথম উচ্চ আদালতে নারীদের বিচারক হওয়ার ব্যবস্থা এবং দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তিনি বলেন, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার পদক্ষেপ জাতির পিতাই শুরু করে যান।
এদিকে, আইনজীবীদের মহাসমাবেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, আইনজীবীরা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সবসময় ছিল, আছে।
তাপস বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় যখন আপনাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে দিয়েছিল, সেদিন আইনজীবীরা ছুটে গেছেন আদালতে। তখন আইনজীবীরা বলেছিলেন, আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।