খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন তিনজন চিকিৎসক

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৩৫

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আজ বুধবার ঢাকায় আসছেন। ইতিমধ্যে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসাসেবা দিতে মার্কিন এই তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে বাংলাদেশে আসতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

গতকাল মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ঢাকার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিদেশি চিকিৎসক আনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের তিন চিকিৎসকের আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, বিদেশ থেকে ডাক্তার আনার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ওনার পরিবার যখন আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, তখন আমরা অনাপত্তি দিয়েছি। এবং ওনারা (চিকিৎসক) আসার ব্যাপারে যেসব সহযোগিতার দরকার ছিল, সব আমরা করেছি।

খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন, ঢাকায় মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েক জন চিকিৎসকের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকের মাধ্যমে রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের যে চিকিৎসকদের সঙ্গে তারা এত দিন সমন্বয় করছিলেন, তাদের মধ্য থেকে আজ যুক্তরাষ্ট্রের তিন চিকিৎসক ঢাকায় আসবেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া গত সোমবার শেষরাত ৪টায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) প্রায় আট ঘণ্টা রাখা হয়। পরে গতকাল বেলা ১১টার পর আবার কেবিনে নেওয়া হয়েছে। গত ৯ আগস্ট থেকে আড়াই মাস ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।

ডা. জাহিদ জানান, এই তিনজনই হাইলি এক্সপার্ট বিভিন্ন বিভাগে অর্থাৎ নেফ্রোলজি, হেপাটোলজি এবং ইন্টার‌ন্যাশনাল রেডিওলজি, লিভার-কিডনি ট্রান্সপারেন্ট বিভাগের। তারা ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) করে বা এ রকম (লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত) রোগী ম্যানেজ করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের জনহোপকিনস ইউনির্ভাসিটির স্কুল অব মেডিসিনের তিনজনই খুব দক্ষ এবং বিখ্যাত চিকিৎসক।

৯ অক্টোবর বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ‘খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে। তার যে অবস্থা, তাতে তাকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকরা সাধ্য অনুযায়ী যা করার, করেছেন। এখন তাকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তার জীবন রক্ষা পেতে পারে।’ খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।

এর আগে, দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এর পর থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top