বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফেরত দিলেন জাকির তালুকদার
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২৪, ১৯:৫৯
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেন কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার। রবিবার ( ২৮ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফাইয়েড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পোস্টে জাকির তালুকদার লিখেছেন, ‘পাঠিয়ে দিলাম। খুব ভারমুক্ত লাগছে।’ সঙ্গে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার আবেদন ফর্মের একটি ছবি এবং একটি চেকের পাতা সংযুক্ত করেছেন জাকির তালুকদার।তিনি ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি থেকে এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। দশ বছর পর তিনি এটি ফেরত দিলেন।
কেন এই পুরস্কার ফেরত দিলেন– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির গণতন্ত্রহীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে আমার এই পুরস্কার ফেরত দেওয়া। প্রতিষ্ঠানটিতে আড়াই দশকব্যাপী নির্বাচন হয় না। প্রতিষ্ঠান যখন সুনাম হারায়, তখন তার মূল্য থাকে না। এ কারণেই আমি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফেরত দিয়েছি।’
জাকির তালুকদারের পুরস্কার ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘আমার কাছে এখনো (পুরস্কারের অর্থ ও সম্মাননা স্মারক) এসে পৌঁছায়নি। এত দিন পর পুরস্কার ফেরত দেওয়া যায় কি না, আমি ঠিক জানি না।’
বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলা একাডেমি পুরস্কার নিয়ে নানারকম সমালোচনা তৈরি হয়। অভিযোগ আছে– নানারকম সম্পর্কের ভিত্তিতে একাডেমি পুরস্কার দিয়ে থাকে। গত ২৪ জানুয়ারি (বুধবার) বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ ঘোষণা করা হয়।
এবারও পুরস্কারপ্রাপ্তদের কয়েকজনকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ঠিক এই সময়ে জাকির তালুকদারের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফেরত দেওয়ায় আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জাকির তালুকদার ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
জাকির তালুকদারের লেখায় ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে পুরাণের সংমিশ্রণ সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাত্রা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। ৫৯ বছর বয়সী জাকির তালুকদারের বেড়া ওঠা নাটোরে। পেশায় তিনি চিকিৎসক, স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। চিকিৎসা ও গবেষণায় কাজ করেছেন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
শুরু থেকেই নিজস্ব গদ্য ভাষা নির্মাণে মনোযোগী ছিলেন জাকির তালুকদার। ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে পুরাণের সংমিশ্রণ তার গদ্যকে দিয়েছে বিশিষ্টতা। জাকির তালুকদার তাঁর ‘মুসলমানমঙ্গল’ গ্রন্থের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১০ বছর পর তিনি এটি ফেরত দিলেন।
জাকির তালুকদার বাংলা কথাসাহিত্যে সুপ্রতিষ্ঠিত আসন তৈরি করে নিয়েছেন। তার মহাকাব্যিক উপন্যাস ‘পিতৃগণ’ সমকালীন কথাসাহিত্যে একটি মৌলিক সংযোজন। কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারের ২৪টির বেশি সাহিত্যকর্ম আছে। এর মধ্যে ‘পিতৃগণ’, ‘কুরসিনামা’, ‘কবি ও কামিনী’, ‘ছায়াবাস্তব’, ‘রাজার সেপাই’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।