জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরিতে আরও আলোচনা প্রয়োজন: আইন উপদেষ্টা

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২০:৪৮

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সবপক্ষের সাথে আরও আলোচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কিছুটা সময় নেয়া যেতে পারে। তবে অযথা যাতে কালক্ষেপণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে এ কথা জানান আসিফ নজরুল।

আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণা পত্র প্রণয়ের বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতে ইসলাম, বামমঞ্চ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সব রাজনৈতিক শক্তি অংশগ্রহণ করেছে।

বৈঠক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণা পত্র প্রণয়ের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, সবাই বলেছেন—এ ধরনের একটা ঘোষণাপত্র করার দরকার আছে। তবে এখানে অনেক সাজেশন আসছে; মোটাদাগে হলো- ঘোষণা পত্রে সবার অবদান বলতে হবে, ধারাবাহিকতা উল্লেখ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক নেচার বা লিগ্যাল নেচার কি হবে সেটা স্পষ্ট করতে হবে। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই ঘোষণাপত্র আরও বেশি আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পক্ষে রাজনৈতিক শক্তি, ছাত্র জনতা—সবার মধ্যে আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে এটাকে প্রণয়ন করতে হবে। এটার জন্য যত সময় প্রয়োজন সময় নেওয়া যেতে পারে। তবে এটাও বলছে যাতে অযথা কালবিলম্ব না হয় সেই মতামত দিয়েছে। সবাই ঐকমত্য হয়েছে, আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই ধরনের ঘোষণাপত্র হওয়া উচিত। সবাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এই প্রক্রিয়ায় আমরা সফল হতে সক্ষম হবো।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, 'জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে যে অটুট জাতীয় ঐক্যের মধ্যে দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী সরকারের পতন ঘটিয়েছি, সেই ঐক্যের একটা ন্যারেটিভ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রণয়ন করতে পারব, এই আশা প্রকাশ করে আজকের সভা শেষ হয়েছে।'

'রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো বিভক্তি দেখা যায়নি। বরং আরও ঐক্য দেখা গেছে। তবে কী পদ্ধতিতে আলোচনা হবে, তা নিয়ে মতামত এসেছে। সবার মতামত যেন সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় সে আলোচনা হয়েছে। আমরা এটা নিয়ে খুব দ্রুত একটা কর্মপরিসর ঠিক করব,' যোগ করেন তিনি।

এর আগে, এদিন বিকেল ৪টার পর ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-(এলডিপি) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। তখন এনিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের ওপর একটি সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করবে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top