শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

মিটফোর্ডে রক্তমাখা রাজত্ব: সোহাগকে হত্যা করেও থামেনি মহিন সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৪:১০

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার বুকে ব্রড ডেই-লাইট-এ এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। শত শত মানুষের সামনে একজন মানুষকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে, কুপিয়ে, পিটিয়ে এবং শেষে কংক্রিট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হলো! অথচ কেউ বাঁচাতে আসেনি।

চলতি সপ্তাহে মিটফোর্ড হাসপাতালের পাশে নিজ দোকান থেকে ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে তুলে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। তার কর্মচারীরা প্রাণভিক্ষা করে, হামলাকারীদের পায়ে পড়ে কেঁদে কেঁদে বলেন— ভাই মারেন না! কিন্তু তাতে মন গলেনি।

পরপর পিটিয়ে, কুপিয়ে, শেষে তার মাথায় ফেলা হয় ইট ও কংক্রিট— যতক্ষণ না তিনি নিশ্চল হয়ে যান। এই বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং দ্রুতই ভাইরাল হয়।

ঘটনার মূলহোতা মাহমুদুল হাসান মহিন, চকবাজার থানা যুবদলের সদস্য সচিব পদপ্রার্থী। সাথে ছিলেন ছাত্রদল নেতা অপু দাস, এবং তাদের অনুসারীরা— ছোট মনির, রিয়াদ, নান্নু, লম্বা মনির, সজীবসহ আরও অনেকে। তারা দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকায় অবৈধ ব্যবসা, চাঁদাবাজি আর দখলদারি রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। প্রতিবাদ করলেই নেমে আসত নির্মম নির্যাতন।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৪ জন। তাদের মধ্যে দুইজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় উদ্ধার হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল। পুলিশ বলছে, ব্যবসায়িক শত্রুতা ও চাঁদার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে, আরও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত।

ছাত্রদল ও যুবদল কেন্দ্রীয়ভাবে অপু ও মহিনকে বহিষ্কার করেছে এবং বলেছে— অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না।”নিহতের পরিবার বলছে, তারা চায় সব আসামি গ্রেপ্তার হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

একটা জীবন এভাবে চলে গেল। প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কি নিরাপদ এমন ঘটনার ভিডিও ক্যামেরায় থাকলেও ন্যায়বিচার কতদূর নিশ্চিত হবে সময় বলবে। তবে সমাজের বিবেক এখন জাগা দরকার।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top