বিদেশে পড়াশোনা ও ভিসা জটিলতা: বাংলাদেশিদের দুশ্চিন্তার কারণ
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:২৫
বিদেশে পড়তে দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করা অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যেই ভিসা জটিলতার কারণে শেষ মুহূর্তে যাওয়ার স্বপ্ন স্থগিত হয়। এমনই একজন তানজুমান আলম ঝুমা।
তিনি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। স্কলারশিপ পেয়েও ভিসা না পাওয়ায় কোনো দেশেই যেতে পারেননি।
"অক্টোবে বুদাপেস্টে আবেদন করি। জানুয়ারিতে ‘নো’ আসে। পরে ইউএসের জন্য আবেদন করি। অক্টোবর থেকে নভেম্বর—প্রায় এক বছর সময় কেটে গেছে," তিনি বলেন।
শুধু শিক্ষার্থী ভিসাই নয়, বহু দেশ ভ্রমণ, শ্রমিক বা কাজের ভিসাও সহজে দিচ্ছে না। খাত সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, এমনকি ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও ভিসা পাওয়াটা কঠিন হয়ে গেছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান জানিয়েছেন, ভারত, ইউএই, কাতার, বাহরাইন, ওমান, উজবেকিস্তান, সৌদি আরব, ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে না। এছাড়া থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ভারতের ভিসা বন্ধের পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকলেও, অন্যান্য দেশ থেকেও ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ছাড়াও ভিসার অপব্যবহার এবং অনিয়মিতভাবে বিদেশ যাওয়া প্রবণতার কারণে দেশগুলোর প্রশাসন সতর্ক হয়ে গেছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, "কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভ্রমণ ভিসা নিয়ে শ্রমিক ভিসায় রূপান্তর করছেন। এ কারণে অল্প সংখ্যক মানুষের ভুলের জন্য অনেককে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।"
পাসপোর্টের র্যাংকিংও সমস্যা হিসেবে কাজ করছে। হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্যমতে, বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম দুর্বলতম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভিসা জটিলতা কমানোর জন্য দেশের অভ্যন্তরে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অসৎ উপায় ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে কূটনৈতিক উদ্যোগও কার্যকর।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবিরের মতে, "ডমেস্টিক পর্যায়ে দৃশ্যমান আইনি ব্যবস্থা নিলে, আন্তর্জাতিকভাবে ভিসা জটিলতা কিছুটা কমানো সম্ভব।"
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।