শেখ হাসিনার মামলার রায় আজ
ট্রাইব্যুনাল এলাকাজুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৫
রাজধানীতে আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা হবে ২০২৪ সালের জুলাই গণহত্যা–সম্পর্কিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঐতিহাসিক রায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা এ আলোচিত মামলার রায়কে ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকা পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের টহল ও চেকপোস্টে তৎপর উপস্থিতি লক্ষণীয়। মাজার গেটের সামনে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের কড়া পাহারা।
আজকের রায়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ঘিরে। বিশ্বের বহু দেশ এ রায়ের দিকে নজর রাখছে বলে ট্রাইব্যুনাল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ঐতিহাসিক এই রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে—দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় দেখার ব্যবস্থাও করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল আজকের দিনটি রায় ঘোষণার জন্য নির্ধারণ করেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী যুক্তি তুলে ধরে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও স্টেট ডিফেন্স অ্যাটর্নি আমির হোসেন পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন।
তৃতীয় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তার শাস্তি প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। তার আইনজীবী খালাসের আবেদন করেছেন।
এ মামলায় মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট প্রথম সাক্ষী খোকন চন্দ্র বর্মণ বীভৎসতার বিবরণ তুলে ধরেন। ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পরিমাণ ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠা, যার মধ্যে তথ্যসূত্র ২,০১৮ পৃষ্ঠা, দালিলিক প্রমাণ ৪,০০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদ তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা।
আজকের রায়ে পরিষ্কার হবে তিন আসামির ভাগ্য—কঠোর শাস্তি নাকি খালাস, কিংবা ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত। দেশ–বিদেশের নজর আজ টানবে এ ঐতিহাসিক রায়।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।