বিদেশের মাটিতে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ২২:৫০

স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের পর কলকাতার তৎকালীন হাই কমিশন।

আজ ১৮ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিন বিদেশের মাটিতে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পাবনার ভাঙ্গুরার গর্বিত সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হোসেন আলী। তখন তিনি ভারতের কলকাতায় পাকিস্তান দূতাবাসে ডেপুটি হাই কমিশনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে বাংলাদেশের বিপ্লবী সরকার শপথ গ্রহণের পরের দিন ১৮ এপ্রিল এম হোসেন আলী তার মিশনের ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পাকিস্তান পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের আনুগত্য ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে তিনি দূতাবাস ভবনের শীর্ষ থেকে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ান ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এটা ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা যা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে কাজ করে। তখন থেকে এম.হোসেন আলী ভারতে বাংলাদেশ মিশনের প্রথম প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন এবং স্বাধীনতা লাভ পর্যন্ত ঐ পদে কর্তব্যরত ছিলেন।

যুদ্ধকালীন সময়ে সেদেশে বাংলাদেশের শরণার্থীদের আশ্রয়,মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রের ব্যবস্থাসহ মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সরকারের সক্রিয় সহায়তা প্রদানে হোসেন আলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হোসেন আলীকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেন। এ সময় যুদ্ধ পরবর্তী বিধ্বস্ত বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকার মনোভাব ইতিবাচক ও দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সহযোগিতা প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন।

মরহুম হোসেন আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সত্যিকারের দেশ প্রেমিক ছিলেন। তিনি ১৯২৩ সালের ১ লা ফেব্রুয়ারি পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার পারভাঙ্গুরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালের ২ জানুয়ারি কানাডার অটোরাতে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে তার পৈত্রিক স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তি স্থানীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গরীব মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।

দিবসটি উপলক্ষে রবিবার হোসেন আলী স্মৃতি পরিষদ ভাঙ্গুরা উপজেলার পারভাঙ্গুড়া গ্রামে অলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও ভাঙ্গুরা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযুদ্ধে হোসেন আলীর অবদান পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির দাবী জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি ভাঙ্গুরায় হোসেন আলী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং ১৮ এপ্রিল পতাকা দিবস হিসাবে উদযাপনের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান।

 

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top