বিএনপির সঙ্গে ২০ আসনে সমঝোতায় আগ্রহী এনসিপি, চায় মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের সুযোগ
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৬
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য আসন সমঝোতা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বিএনপির সঙ্গে অন্তত ২০টি আসনে সমঝোতা করতে চায় এবং বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের দাবিও জানিয়েছে।
দুই দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আলোচনা এখনো অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এনসিপি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে জোটে যাবে, নাকি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে—সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, এনসিপির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ব্যক্তিগতভাবে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। তবে বিএনপি চায়, এনসিপি যেন জামায়াত বা তাদের নেতৃত্বাধীন কোনো জোটের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় না যায়।
একই সঙ্গে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, এনসিপির নেতারা শুধু আসন ভাগাভাগিই নয়, বরং নিজেদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও চান। জানা গেছে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিনজন এনসিপি নেতাকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। তবে এ বিষয়ে বিএনপি এখনও কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
অন্যদিকে, এনসিপি ঢাকায় চারটিসহ অন্তত ২০টি আসনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করতে আগ্রহী। জামায়াত ইসলামী এনসিপিকে বেশি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও, দলের একাংশ চায় এনসিপি যেন ডানপন্থি ভাবমূর্তি থেকে দূরে থেকে মধ্যপন্থি অবস্থান বজায় রাখে।
দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি বলেছেন,
“আমাদের মৌলিক দাবিগুলোর সঙ্গে যারা কাছাকাছি আছে, এমন দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়া বা সমঝোতা বিবেচনায় রাখতে পারি।”
এনসিপি ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে। প্রধান করা হয়েছে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে, সেক্রেটারি তাসনিম জারা। দলটি ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই, প্রচারণা ও মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন—
-
আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (ঢাকা-১১)
-
সদস্য সচিব আখতার হোসেন (রংপুর-৪)
-
মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী (ঢাকা-১৮ বা চাঁদপুর-৫)
-
সেক্রেটারি তাসনিম জারা (ঢাকা-৯)
-
যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব (ঢাকা-১৪)
-
উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (পঞ্চগড়-১)
-
দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (কুমিল্লা-৪)
-
যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ (নোয়াখালী-৬)
এসব আসনের মধ্যে শুধু ঢাকা-৯ ও ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি, যা এনসিপির প্রার্থীদের জন্য ফাঁকা রাখা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে বুধবার (৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন,
“আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমাদের সংস্কার আর জুলাই সনদের দাবির সঙ্গে যদি কোনো দল সংহতি প্রকাশ করে, তাহলে জোটের ব্যাপারটা বিবেচনা করব।”
প্রার্থীর তালিকা ঘোষণার সময়সূচি বিষয়ে তিনি আরও জানান,
“১৫ নভেম্বরের মধ্যে আমরা প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করব।”
তিনি আরও বলেন,
“বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের সম্মানে হয়তো আমরা সেই আসনগুলোতে প্রার্থী দেব না।”
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।