শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

দেশে দুজন দরবেশ, আদালতকে অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ২৩:০২

ছবি: সংগৃহীত

 নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জোর করে এবং মালিককে গুম করে গুলশানের একটি বাড়ি হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

 বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নের্তৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আর এ জুট ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড বনাম মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার এবং অন্যান্য মামলায় রিভিউ পিটিশনের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।

 এর ফলে আপিল বিভাগের পূর্বের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে এখন পুনরায় আপিল শুনবে আপিল বিভাগ বলে জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।

 আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল এম. আসাদুজ্জামান বলেন, দেশে দুজন দরবেশ আছে। একজন সাদা, আরেকজন কালো। কালো দরবেশ হচ্ছে এই মামলার নজরুল ইসলাম মজুমদার। দুজনই এখন কারাগারে। এদের জন্যই দেশের এই অবস্থা। এরা হলেন অলিগার্ক (দুর্নীতি সাধনে চরম ক্ষমতাচর্চায় বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত)।

 সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল বলেন, আমি এই মামলার আইনজীবী ছিলাম। অথচ আমাকে না জানিয়ে অস্ত্রের মুখে এবং বাদীকে গুম করে মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে।

 সিনিয়র কৌসুলি অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বলেন, ফিদা এম কামাল যে অভিযোগ করেছেন এটাই সত্য। এরপর আর কোনো অভিযোগ লাগে না। পিটিশনারকে আয়নাঘরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অপমানে এবং ভয়ে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

 প্রসঙ্গত, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জোর করে গুলশানের একটি বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠে। রাজধানীর বনানীর বাসিন্দা আনোয়ারুল কবির খান গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে দেওয়া অভিযোগে এ দাবি করেন।

 অভিযোগে আনোয়ারুল কবির খান জানান, তিনি এ আর এ জুট ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। তার বাবা অগ্রণী ব্যাংক, নারায়ণগঞ্জ শাখা থেকে ব্যবসায়িক ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঋণের বিপরীতে তাদের গুলশানের বাড়িটি বন্ধক ছিল। পরে ব্যাংক ঋণটি খেলাপি হয়ে যায়। এরই মধ্যে বন্ধকি সম্পত্তির ওপর নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের দৃষ্টি পড়ে। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রির একটি ভুয়া সমঝোতা দলিল তৈরি করেন। পরিবারের দুজন সদস্য দেশে না থাকলেও সমঝোতার দলিলে তাদের স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে।

 আনোয়ারুল কবির বলেন, আমি এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করি। গুলশান থানায় জিডিও করি। আদালতেরও শরণাপন্ন হই। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি লিভ পিটিশন বিচারাধীন ছিল। মামলা পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে নজরুল ইসলাম মজুমদার আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। একদিন রাতে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের চেম্বারে নিয়ে যায়। ওখানে আরও কিছু কাগজপত্রে আমার সই নেওয়া হয়। একজন উকিল বলেন, এগুলো মামলা প্রত্যাহার আবেদন। তারা যা করতে বলে তাই করি। পরে হাইকোর্টের নিচতলায় নিয়ে যায়। ওখানেও কিছু কাগজে সই করি। সব কাজ শেষে তারা আমাকে বাসায় নামিয়ে দেয় এবং বলে তাদের অনুমতি ছাড়া আমি যেন বিদেশ না যাই।

  

 

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top