জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি, এনসিপিতে নারীনেত্রীদের পদত্যাগ ও সরে দাঁড়ানো

নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪

সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদানের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গভীর সংকটে পড়েছে। দলটির একাধিক শীর্ষ নারী নেতা জোটের বিরোধিতা করে পদত্যাগ, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো কিংবা দলীয় কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা তরুণদের নেতৃত্বে গড়া নতুন দলটির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা জামায়াতের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে ভোটারদের স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করেছেন।

এর পরদিন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনও পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন, তবে রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।

এদিকে যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন দল ছাড়েননি, তবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম নির্বাচনের সময় দলীয় কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জামায়াতসহ ১০-দলীয় জোটে অংশগ্রহণ এনসিপির ঘোষিত আদর্শ ও মূল বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতাকে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এ ধরনের জোট তৃতীয় শক্তি হিসেবে এনসিপির আত্মপ্রকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, বিশেষ করে নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এনসিপি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বাসায় এক বৈঠকে ছয় নারী নেতা জামায়াতের সঙ্গে প্রায় চূড়ান্ত হওয়া আসন সমঝোতার বিরোধিতা করেন এবং জোট হলে একযোগে পদত্যাগের হুমকি দেন। পরে ৩০ জন নেতা লিখিতভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আপত্তির কথা জানান। চিঠিতে জামায়াতের রাজনৈতিক ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা এবং নারী সদস্যদের বিরুদ্ধে অনলাইন হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

তবে এসব আপত্তির মধ্যেই গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, নির্বাহী পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই জোট করা হয়েছে। যারা বিরোধিতা করছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

রাজনীতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির গঠন ও আন্দোলনে নারীনেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই নেত্রীদের একাংশের সরে যাওয়া বা পদত্যাগ দলটির প্রথম জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকেত দিচ্ছে।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top