নারী চিকিৎসকের হিজাব টেনে নামানো নিয়ে তীব্র বিতর্কে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০১

সংগৃহীত

এক মুসলিম নারী চিকিৎসকের হিজাব টেনে নামানোর ঘটনায় তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর নেতা নীতীশ কুমার। সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে আয়োজিত একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। খবর জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।

১২০০-এর বেশি নবনিযুক্ত ‘আয়ুষ’ চিকিৎসকের মধ্যে নিয়োগপত্র বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিজ হাতে কয়েকজন চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় হিজাব পরিহিত এক মুসলিম নারী চিকিৎসক মঞ্চে এগিয়ে গেলে নীতীশ কুমার হঠাৎ তার হিজাব টেনে নামিয়ে দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার সময় বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী পেছন থেকে নীতীশ কুমারকে থামানোর চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্যসচিব দীপক কুমার ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডেকে হাসতে দেখা যায়, যা নিয়েও সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। আসাদুদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম এ ঘটনাকে নারীর সম্মান ও ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়।

কংগ্রেস দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি শেয়ার করে নীতীশ কুমারের আচরণকে ‘নির্লজ্জ’ আখ্যা দেয়। দলটির নেতারা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন আচরণ করলে নারীদের নিরাপত্তা কোথায় দাঁড়ায়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করা হয়।

প্রধান বিরোধী দল আরজেডিও নীতীশ কুমারের মানসিক অবস্থার বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। দলটির নেতারা বলেন, এই ঘটনা জেডিইউ-বিজেপি জোটের নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন এবং একজন নারীর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

ঘটনাটি নিয়ে ধর্মীয় মহল থেকেও প্রতিক্রিয়া এসেছে। দেওবন্দি আলেম ক্বারী ইসহাক গোরা বলেন, একজন নারীকে প্রকাশ্যে অপমান করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এ ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

উল্লেখ্য, নীতীশ কুমার নিজেই ওই অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে ১ হাজার ২৮৩ জন আয়ুষ চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সেই অনুষ্ঠানেই ঘটে যাওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে বিহারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক চলছে।

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top