সফল পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন

৫০ বছর পর চাঁদে আবারো নাসার চন্দ্রাভিযান

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ০৩:৩৩

নাসার চন্দ্রাভিযান

দীর্ঘ ৫০ বছর পরে নভোচারীদের চাঁদে পাঠাতে চায় ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)। তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। এজন্য এসএলএস রকেট ও ওরিয়ন স্পেস ক্র্যাফটের কার্যক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাইয়ের উদ্দেশে মহাকাশে যাচ্ছে মিশন আর্টেমিস ওয়ান।

বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হয় মিশন আর্টেমিস ওয়ান। ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চপ্যাড ৩৯বি থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মূল লক্ষ্য চাঁদের মাটিতে নামার জন্য সম্ভাব্য ল্যান্ডিং সাইটগুলোকে দেখে রাখা। এটি যাত্রিবিহীন অভিযান। এর পরেও ধাপে একইভাবে পরীক্ষা চলবে. তারপর নভশ্চর নিয়ে চাঁদে পাড়ি দেবে নাসার রকেট।

নাসার এই মিশনের স্থায়িত্ব অন্তত ২৫ দিন ১১ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট। রকেটটির গন্তব্য চাঁদের ‘ডিস্ট্যাস্ট রেট্রোগেড অরবিট (ডিআরও)’। আর্টেমিস ওয়ান প্রায় ২১ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে। ২৫ দিনের প্যাকেজে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে অবতরণের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে আসবে ওরিয়ন। মহাকাশচারীদের জন্য লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম ঠিকঠাক ভাবে কাজ করছে কি না তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে আসবে স্পেস রকেট।

রকেটটি ফেরার সম্ভাব্য তারিখ চলতি বছরের আগামী ১১ ডিসেম্বর। এটি অবস্থান করবে প্রশান্ত মহাসাগরের স্যান ফ্রান্সিসকো উপকূলে। ফেরার সময় সম্ভাব্য গতি থাকবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কিলোমিটার।

আর্টেমিস ওয়ান মিশনের লঞ্চ ডিরেক্টর চার্লি-ব্ল্যাকওয়েল থম্পসন উৎক্ষেপণ সফল করার জন্য সংস্থাটির পুরনো প্রথা মেনে নিজের টাই কেটেছেন। এটি মহাকাশের উদ্দেশে ১৪ হাজার মাইলের বেশি গতিতে ছুঁটছে ওরিয়ন স্পেস ক্র্যাফট।

নাসার পরবর্তী চন্দ্রাভিযান নিয়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে। চাঁদের কক্ষপথে প্রথম ‘লুনার স্পেস স্টেশন’ বানাচ্ছে নাসা। এই প্রকল্পের নাম  ‘গেটওয়ে টু মুন’ বা ‘আর্টেমিস’। পৃথিবীর জোরালো অভিকর্ষজ বলের মায়া কাটিয়ে মহাকাশযানকে চাঁদে পাঠানোর ঝক্কি অনেক। কাজেই লুনার স্পেস স্টেশন হলে সেখানে বসেই গবেষণা চালানো যাবে। আবার যান বানিয়ে যখন তখন পাঠিয়ে দেওয়া যাবে মহাকাশে।

চাঁদে যখন তখন পাড়ি দেওয়ার জন্য স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস) রকেট বানিয়েছে নাসা। এই প্রোগ্রামের ম্যানেজার জন হানিকাট বলেছেন, আর্টেমিস-১ মিশনের পর থেকে পরবর্তী সবকটি মিশনই খুব জটিল হবে।

তিনি বলেন, চাঁদে মানুষ নিয়ে যাওয়ার বড় পরিকল্পনা আছে। লুনার স্টেশনের কাজও শেষ করতে হবে। তাই এমন রকেট দরকার ছিল যা উন্নত প্রযুক্তির ও শক্তিশালী হবে। সে জন্যই এসএলএস রকেট তৈরি করা হয়েছে। এর আরএস-২৫ ইঞ্জিন প্রচুর পরিমাণ শক্তি তৈরি করবে। খুব কম সময় চাঁদ বা অন্যান্য মহাকাশ অভিযানে পাড়ি দিতে পারবেন নভশ্চররা।

নাসার পরিকল্পনা—২০২৫ সাল নাগাদ মানুষকে চাঁদে অবতরণ করানো। এবার প্রথমবারের মতো চাঁদের বুকে এক নারী নভোচারী পাঠানোর কথা ভাবছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী এবং খুব সম্ভবত মানুষের চাঁদে যেতে আরও ২/৩ বছর বেশি সময় লাগবে। ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৭ অভিযানে সর্বশেষ ২ নভোচারী চাঁদে নেমেছিলেন। তাদের আগে আরও ১০ জন এই গৌরবের অংশীদার হন। প্রথম মানুষসহ চন্দ্রাভিযান হয়েছিল ১৯৬৯ সালে, অ্যাপোলো ১১ ক্যাপসুলের মাধ্যমে।

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top