মোদির আরেকটি জয় বিশ্বকে কী বার্তা দেবে

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২৪, ২০:৪৪

ছবি: সংগৃহীত

দিনকয়েক আগে প্রকাশিত বুথ ফেরত সমীক্ষা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভালো ফলের ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু তার বাস্তব প্রতিফলন হলো না। বরং ধরাশায়ীই হলো গেরুয়া শিবির। 

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বধীন বিজেপি। তাদের নেতৃত্বাধীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি।

ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ৫৪৩টি আসনের ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ২৯৩টি এবং ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩১ আসন। সরকার গঠনের জন্য ২৭২ টি আসন প্রয়োজন। সেটি নিশ্চিত করতে পারলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের সুযোগ নেই বিজেপির।

 
৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপি এককভাবে জিতেছে বা এগিয়ে আছে মোট ২৪২টি আসনে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে অন্তত ৩০টি কম। এরপরই সবচেয়ে বেশি আসনে এগিয়ে আছে কংগ্রেস - ৯৮টি। কংগ্রেস ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর এবার তাদের সেরা ফল করতে চলেছে, এটা বেশ স্পষ্ট।

এছাড়া উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসও বেশ ভালো ফল করছে। সমাজবাদী পার্টি এই মুহুর্তে ৩৪টি ও তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৪৪ দিনের বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত সাত ধাপের লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের জন্য দেশটিতে আজ ভোট গণনা চলছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানা যায়, নির্বাচনে প্রায় ৯৭ কোটি মানুষ ভোট দেওয়ার যোগ্য ছিল। এর মধ্যে ৩১ কোটি ২০ লাখ নারী ভোটারসহ মোট ৬৪ কোটি ৩০ লাখ ভোটারের অংশগ্রহণে ভারত এবার একটি বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

অংক বলছে, নরেন্দ্র মোদির টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা হলে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থনীতির দেশটির ৭৩ বছর বয়সী এই হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতার সঙ্গেই আরও পাঁচ বছর কাজ করতে হতে পারে পশ্চিমা বিশ্বের।  

মোদির নেতৃত্বে ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসনের জন্য জোর তদবির চালিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তাকে মনে করেছেন চীনের বিপরীতে এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে। মানবাধীকারকর্মীরা অবশ্য মোদির শাসনের মধ্যে কর্তৃত্ববাদ দেখতে পাচ্ছেন, যার সমালোচনাও কম নয়।    

চীনের সঙ্গে ভারতের বিরোধ থাকলেও ব্রিকস জোটে রয়েছে দেশ দুটো। এই জোটকে শক্তিশালী করার উদ্যোগেও রয়েছেন মোদি। অন্যদিকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতা নিরসনে তাকে সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। ২০১৫ সালে অবশ্য একবার দেশটি সফর করেছিলেন তিনি। 

এনডিএ জোটে  ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি ছাড়াও রয়েছে,তেলেগু দেশাম পার্টি (টিডিএম), জনতা দল (ইউনাইটেড), লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস), জনতা দল (সেকুলার)

অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোটের বড় দলগুলোর মধ্যে কংগ্রেস ছাড়া রয়েছে, সমাজবাদী পার্টি, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, দ্রাবিড় মুন্নেত্র কাজগম (ডিএমকে), শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে), জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (শারদ পাওয়ার), যুবজন শ্রমিক রাইথু কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি), ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)- সিপিআই(এম)।

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top