গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি চুক্তিকে স্বাগত জানালো জাতিসংঘ
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫:১৯
গাজায় অস্ত্রবিরতি ও বন্দি চুক্তির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এই চুক্তিকে স্বাগত জানান তিনি। খবর-ভয়েস অব আমেরিকা। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ১৫ মাসের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাস এবং ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছে। দীর্ঘ কয়েক মাস আলোচনার পর এই চুক্তিতে পৌঁছায় উভয়পক্ষ, যার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ছিল কাতার।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিচুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস সকল পক্ষকে তাদের প্রতিশ্রুতিকে বহাল রাখতে এবং চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি, মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীদের এই চুক্তি সম্ভব করার লক্ষ্যে তাদের নিবেদিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি। একটি কূটনৈতিক নিস্পত্তি খুঁজে পেতে তাদের অবিচল প্রতিশ্রুতি এই অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তাদের প্রতিশ্রুতিকে বহাল রাখতে এবং এটা নিশ্চিত করতে যে এই চুক্তি যেন সম্পুর্ণ ভাবে বাস্তবায়িত হয়’।
যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের সঙ্গে এই মধ্যস্ততায় নেতৃত্বদানকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-সানি দোহায় সাংবাদিকদের বলেন, এই চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ হচ্ছে ৪২ দিন। এই সময়ের মধ্যে, হামাস ৩৩ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিবে যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়লে সন্ত্রাসী হামলার সময় থেকে হামাসের হাতে বন্দি হয়ে রয়েছে। এর পরিবর্তে ইসরায়েলও বহু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিবে।
গেল বছরের ৬ অক্টোবর সংঘাত শুরুর সময় থেকেই জাতিসংঘের প্রধান অস্ত্রবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তির দাবি করে আসছেন। এই সংঘাত গাজার বিশ লাখের বেশি অধিবাসীর জন্য মারাত্মক মানবিক সংকট তৈরি করেছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও হাজার হাজার লোক আহত হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে এই সংঘাতে যে মারাত্মক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার প্রশমন করা। জাতিসংঘ এই চুক্তি বাস্তবায়নকে সমর্থন দিতে এবং অসংখ্য ফিলিস্তিনি যারা দূর্ভোগের শিকার তাদের জন্য মানবিক ত্রাণ বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আমরা তাই-ই করবো যা মানবিকভাবে সম্ভব এটা জেনেও যে আমরা গুরুতর চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবো। আমরা আশা করি আমাদের এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্য মানবিক সংগঠন, বেসরকারি ক্ষেত্র ও দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগও এ ধরণের প্রচেষ্টা চালাবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সমাজ যেন ভুলে না যায় বৃহত্তর লক্ষ্যের কথা- ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য দুইটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। আমি সব পক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে, ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও ব্যাপকতর অঞ্চলের জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ সৃষ্টির সুযোগ গ্রহণ করতে। দখলদারিত্ব শেষ করে এবং আলোচনার মাধ্যমে দু’টি রাষ্ট্র সমাধানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ও আগেকার সমঝোতা অনুযায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সৃষ্টি এখন জরুরি অগ্রাধিকারের বিষয়।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।