সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের মার্কিন সফর: এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদনের ইঙ্গিত
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এ সফরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের চাওয়া মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়।
দীর্ঘদিন সৌদি আরব এই অতি আধুনিক বিমান কিনতে চেয়েও ইসরায়েলের সামরিক প্রাধান্য রক্ষার নীতির কারণে ওয়াশিংটন বিক্রিতে অনুমতি দেয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এবার ইঙ্গিত দিয়েছে যে, রিয়াদ এফ-৩৫ কিনতে পারবে।
এফ-৩৫ হলো যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিনের তৈরি স্টেলথ ফাইটার জেট, যা রাডারে শনাক্ত করা কঠিন, দূরপাল্লায় আঘাত হানতে সক্ষম এবং আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে আকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রযুক্তিতে সজ্জিত। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইতালি, নরওয়ে ও অস্ট্রেলিয়া সহ কয়েকটি দেশ এই বিমান ব্যবহার করছে।
সৌদি আরবের দাবি, এফ-৩৫ হাতে পেলে তাদের বিমানবাহিনীর সক্ষমতা অন্য মাত্রায় পৌঁছাবে। ইরানসহ আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলা, ভবিষ্যতের সংঘাতে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক প্রভাব বাড়ানোই তাদের মূল লক্ষ্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের অন্যতম বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ হিসেবে সৌদি বাহরে এফ-৩৫ যুক্ত হওয়া প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত বড় পরিবর্তন আনবে।
বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সমমানের এফ-৩৫ বিক্রির পক্ষে। এটি দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন, কারণ ওয়াশিংটনের নিরাপত্তা নীতিতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক প্রাধান্য রক্ষা করা ছিল মূল ভিত্তি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো কংগ্রেসের হাতে, যারা চাইলে বিক্রয়কে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল, এবারের সফর ও ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান তা দূর করে দুই দেশের সম্পর্ককে পুনরায় ঘনিষ্ঠ করার বার্তা দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেস অনুমোদন দিলে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের পর সৌদি আরবই হবে দ্বিতীয় দেশ, যার হাতে এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পৌঁছাবে। তবে ইসরায়েল গ্রহণ করবে কি না এবং মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে এর প্রভাব কী হবে—এখন তা আলোচনার মূল বিষয়।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।