ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনায় ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব: আইএইএ

নিউজফ্ল্যাশ৭১ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১৯:৫১

ফাইল ছবি

ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনাতেই ইউরেনিয়াম কণা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)। রয়টার্স এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইরানের ওই দুই স্থাপনায় আইএইএর গবেষকদের ঢুকতে দীর্ঘদিন ধরে বাধা সৃষ্টি করে আসছিল ইরান। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে গবেষকেরা সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁরা নমুনা দেখে বলছেন, দুই স্থাপনায় ইউরেনিয়ামের কণার উপস্থিতি মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও আইএইএ অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, গোপনে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনা করছে ইরান। তবে ইরান তা বরাবরই নাকচ করে আসছে। এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের দুটি পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শনকারী গবেষকদের নেওয়া নমুনায় রেডিওঅ্যাকটিভ বস্তুর সন্ধান মিলেছে। আইএইএর গবেষকদলের সঙ্গে ঘনিষ্ট পর্যায়ে কাজ করা চার কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেছেন, নমুনায় পাওয়া বস্তুর মধ্যে ইউরেনিয়াম রয়েছে। সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হতে পারে। ফলে আইএইএ’র সদস্য দেশ হিসেবে ইরান ইউরেনিয়ামের ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য।

এদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বাধা দেওয়ার কথা বলে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে বেরিয়ে যান এবং দেশটির বিরুদ্ধে একতরফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু, জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়ে আসার পর পরমাণু চুক্তিতে আবার যোগ দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেন। এবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিল, তারা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে চায়।মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ও জার্মানির আমন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে।’ তবে ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। ইরান ২০১৯ সালে চুক্তি ভেঙে ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ায়। গত কয়েক মাসে ইরান তাদের ইউরেনিয়াম মজুদ অনেকটা বাড়িয়েছে। এর পাশাপাশি ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজও করছে। পরমাণু বোমার জন্য যেটা জরুরি।

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি ভিডিও-বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তারপর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান যদি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি মানে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রও চুক্তিতে ফিরবে এবং ইরানের সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রকেই আলোচনার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। ইউরোপের দেশগুলো আগে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালন করুক এবং ট্রাম্প যেভাবে ইরানের ওপর যাবতীয় দায় চাপিয়ে দিয়ে আর্থিক সন্ত্রাসবাদের পথ নিয়েছিলেন, তা থেকে সরে আসুক যুক্তরাষ্ট্র। আমরা আগে কাজ দেখতে চাই।’

এনএফ৭১/ফামি/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top