শক্ত হাতে সরকার পরিচালনা করুন, প্রধান উপদেষ্টাকে মির্জা ফখরুল
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৯:১৭

শক্ত হাতে সরকার পরিচালনা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘শহীদ সেনা দিবসের’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
তিনি বলেছেন, ‘আপনি (২৫ ফেব্রুয়ারি) শক্ত হাতে আপনার সরকারকে পরিচালনা করুন। কেউ যেন আপনাকে বলতে না পারে যে আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন। সেটা শুনতে চাই না, কারণ আপনি একজন বিখ্যাত মানুষ। সারা বিশ্বে আপনার নাম রয়েছে। সেটার মর্যাদা রাখবেন এটাই আশা করছি।’
যেকোনো মূল্যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর দেশকে সমৃদ্ধভাবে বিনির্মাণে সুযোগ এসেছে। কিন্তু আজকে আবার সেই সুযোগকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পতিত শেখ হাসিনা অবস্থান নিয়েছে দিল্লিতে, সেখান থেকে চক্রান্ত করছে, কি করে এই বিজয়কে নস্যাৎ করে দেয়া যায়, কীভাবে বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করলে স্থিতিশীলতা আসবে না। কোনোভাবেই আমরা একটা স্থিতিশীলতা পাবো না। তাই, প্রকৃতপক্ষে নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন- ‘আমরা নাকি শুধু নির্বাচন নির্বাচন করি; আমরা সংস্কার করতে নাকি চাই না’ এতো বড় মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কতিপয়, গুটিকয়েক মানুষ বিএনপিকে টার্গেট করে এ মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এরা অপপ্রচার করে বিএনপিকে হেয় করতে চায়। আমরা যেকোনো মূল্যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবো, স্থিতিশীলতা রক্ষা করবো, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবো।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে নস্যাৎ করার আবার ষড়যন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন দিল্লিতে। তিনি সেখান থেকে চেষ্টা করছেন এই বিজয়ের ফলাফল কীভাবে নস্যাৎ করে দেয়া যায়। সেখান থেকে চক্রান্ত করছেন, বাংলাদেশে কীভাবে নৈরাজ্য, অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করা যায়। তারই চক্রান্ত আমরা বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে দেখছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তী সরকার, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা সরকার, ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের আশা-প্রত্যাশা আছে, এই সরকার জনগণের সেই আশা পূরণ করবে। আমরা বলে আসছি, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা না করলে কোনোভাবেই স্থিতিশীল অবস্থা পাবো না। তাই আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার গঠিত করতে হবে। এর জন্যই আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, কিছু সংখ্যাক মানুষ অন্যায়ভাবে দেশ ও দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করার চেষ্টা করছে। বিভিন্নভাবে রাস্তায় এনে জড়ো করার চেষ্টা করছে। একই কায়দায় দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির কায়দা করছে। এটি কোনোমতেই দেশ, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার জন্য ভালো নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের শক্তি। সব সময় আমরা দেখেছি জাতির ক্রান্তিলগ্নে তারা এগিয়ে আসে। আমরা দেখেছি ৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন হামলা করেছে আক্রমণ করেছে হত্যা করেছে তখন আমাদের মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে গোটা জাতিকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। সেদিন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। আবার আমরা দেখেছি ২৪ এ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকৃত পক্ষে দেশপ্রেমিকের ভূমিকা পালন করেছেন।
দলের নেতাকর্মী ও দেশের মানুষের প্রতি বিএনপির এ নেতার অনুরোধ— আমি আজকে অনুরোধ করবো, যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শে বিশ্বাস করেন, শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করেন, তাদের বলবো আপনারা ধৈর্য ধরবেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। সেই সঙ্গে দেশের মানুষকে আহ্বান জানাতে চাই, আজকে কাদা ছোড়াছুড়ি, তর্ক-বিতর্ক বন্ধ করে ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা গণতান্ত্রিক একটি জায়গায় পৌঁছাতে চাই।
বিষয়: অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি মহাসচিব বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মির্জা ফখরুল ইসলাম মির্জা ফখরুল ফখরুল ইসলাম আলমগীর
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।