মাদারীপুরে কোরবানির সময়েও কাজ নেই কামারপাড়ায়!
মাদারীপুর থেকে | প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২১, ২০:৪২
এক সপ্তাহ পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির এ ঈদে মুসলমানরা হাজার হাজার গবাদিপশু কোরবানি দেন। কিন্তু এবছর মাদারীপুরের কামারপাড়া সরব হয়ে ওঠেনি।
সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও এই ঈদে কিছু বাড়তি আয়ের আশায় থাকেন মাদারীপুর জেলার প্রায় শতাধিক কামার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু মহামারী করোনা সংক্রমণের হার বেশি হওয়ায় সে আমেজে ভাটা পড়েছে। গত দু’সপ্তাহ লকডাউন ও কাজ হারিয়ে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস হওয়ার প্রভাব পরেছে কামারপাড়ায়।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের পুরান বাজার কামারপাড়ার কামারেরা খুব অল্পসংখ্যক দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি তৈরি করছেন। কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে এই সময়ে কামারদের ব্যস্ত সময় পার করার কথা থাকলেও সেই চিত্র চোখে পড়েনি। জেলার রাজৈর,শিবচর,কালকিনি উপজেলা ও ডাসার থানার বাজারের কামারদের অবস্থা একই রকম। ক্রেতার দেখা না পেয়ে তাই হতাশ কামারেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় কোরবানির গবাদিপশুর মাংস কাটার জন্য প্রচুর দা, চাপাতি, কুড়াল ও ছুরি প্রয়োজন হয়। এসব তৈরি করতে কামারেরা বছরের এই সময় থাকেন খুব ব্যস্ত। অথচ এবার করোনার কারণে কাজ হারিয়ে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে আছে। এ কারণে কোরবানির গরু ছাগলের গোস্ত কাটার জন্য তাঁরা এসব উপকরণ কিনতে কামারপাড়ায় আসছে না। এ জন্য এখনো জমে ওঠেনি কামারপাড়া।
গোবিন্দ,বিষু,হরিচাদ,অমল,কার্তিক কর্মকার বলেন, ঈদের ১৫-২০ দিন আগে থেকেই বটি, দা, ছুরি, চাকু ও চাপাতিসহ নানা হাতিয়ার তৈরি করতাম। এ বছর করোনা সংক্রমণ বেশি হওয়ার কারণে গত বছরের তুলনায় কাজ অনেক কম। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
তারা বলেন, সারা বছর কোনো মতে কাজ করে সংসার চালাই। আমরা আশায় থাকি কোরবানির ঈদে বাড়তি আয় করব। কিন্তু এবার আর সে আশা মনে হয় পূরণ হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের কারণে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। কয়লা ও লোহার যে দাম, সেই দামের সঙ্গে সমন্বয় করে পণ্য বিক্রি করতে পারছি না।’
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা উপেজলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদারীপুর বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুল ইসলাম তুষার ভুইয়া বলেন, ‘আসলে এই দা, ছুরি ও চাপাতি তৈরির পেশার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের আয়ের পরিমাণ খুবই কম। বছরের এই ঈদের সময়ে যে অতিরিক্ত আয় হয়, তা দিয়েই কোনো রকম চলে যায় সারা বছর। করোনার কারণে এবার তাঁদের কাজের পরিমাণ খুবই কম। তবে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে এনে সহায়তা প্রদানের কাজ অব্যহত রয়েছে।’
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: মাদারীপুর
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।