অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলে আবারও মনির আয়রন ইন

কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশিত: ৩ আগষ্ট ২০২১, ০১:১১

অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলে আবারও মনির আয়রন ইন

কুষ্টিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন করোনায় ও চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫শ ৭১ জন। ৬শ সংখ্যা পূরণ হতে আর মাত্র ২৯ জনের কমতি রয়েছে। এ ছাড়া ৫৩৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে ২৭ জুলাই এক দিনে হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০ জনের মৃত্যু ঘটে।

সরজমিনে গণমাধ্যম কর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগী ও অভিভাবকদের সাথে আলাপকালে জানতে পারেন, অধিকাংশ সিল্ডিারের (মুখে সাদা রং দেয়া, মনির আয়রন লেখা) সিলিন্ডারগুলোতে সর্বোচ্চ ১২শ থেকে ১৫শ চাপ রয়েছে। চিকিৎসারত রোগীরা ছটফট করছেন।

২৬ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজন রোগীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেছেন, ওই সাদা রংয়ের ছোট সাইজের সিলিন্ডারে অক্সিজেন আছে কিনা বোঝার উপায় নেই, অক্সিজেন আসা যাওয়া করলে মিটার নড়াচড়া করে এসবের কোন বালাই ছিল না, তাদের ধারণা মনির আয়রন সিলিন্ডারে অক্সিজেন না দিয়ে কোনটাই অর্ধেক দিয়ে পুরো রিফিল করা বলে হাসপাতালে সরবরাহ করেছে। আর এতে তাদের রোগীর মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছে।

হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স এ অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিষয়ে কোন এক অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ থাকতে দেখা গেছে বলে রোগীর অভিভাবকদের অভিযোগ। অক্সিজেন সিলিন্ডারে ২ হাজারের পরিবর্তে মাত্র ১২শ থেকে ১৫শ প্রেসারে অক্সিজেন দিয়ে হাসপাতালে সরবরাহ করায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে এমন বিবেচনায় ২৭ জুলাই রাতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি হাসপাতালে মনির আয়রন থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল গ্রহণ না করতে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ আব্দুল মোমেনকে নিদের্শনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, মনির আয়রনের অক্সিজেন সিলিন্ডারতো ইন্ডাষ্ট্রিয়াল, তার কাছ থেকে আর কোন সিল্ডিার রিফিল নেয়ার প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি যশোরে অক্সিজেন রিফিল সেন্টার বন্ধ হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুনরায় মনির আয়রন থেকে ৩১ জুলাই থেকে মনির আয়রন থেকে সিলিন্ডার রিফিল গ্রহণ শুরু করেছেন।

এতে রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ২৬ ও ২৭ জুলাই। তার পর মনির আয়রন থেকে সিলিন্ডার রিফিল বন্ধ করা হয়। এর পর থেকে মৃতের সংখ্যা ৭-৮ নেমে আসে। ১ আগস্ট পুনরায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এখানে সংশ্লিষ্ট মহলের সন্দেহ এখন মনির আয়রন’র দিকে।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক আকরামুজ্জামান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে ২০০ শতাধিক পয়েন্টে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ১৭টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানোল চালু রয়েছে। বেশি গুরুতর রোগীদের জন্য আলাদাভাবে পেয়িং ওয়ার্ডে রাখা হয়।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসিমুল বারী বাপ্পি জানান, করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ৩০টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানোলার মধ্যে ১২টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানোলা নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: কুষ্টিয়া


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top