হাইকোর্টের নির্দেশ সত্বেও প্রধান শিক্ষককে যোগদানে বাধা, লাঞ্ছিত

নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২২, ০৬:৪৪

হাইকোর্টের নির্দেশ সত্বেও প্রধান শিক্ষককে যোগদানে বাধা, লাঞ্ছিত

হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে কাজে যোগদানে বাধা প্রদাণ করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। প্রতিবাদ করায় গালিগালাজ, লাঞ্ছিত করাসহ চেয়ারের আঘাতে আহত করা হয়েছে ওই শিক্ষককে। মামলা করায় হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। 

গত মঙ্গলবার দুপুরে সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, পারিবারিক একটা ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে আমি সাময়িকভাবে বরখাস্ত ছিলাম। এসময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। হাইকোর্ট থেকে যোগদানের রায় পেয়ে নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেই। গত ১৪ জুন থেকে নিয়মিত স্কুলে যাতায়াতও করছি। কিন্তু তবুও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব ছাড়ছেন না।

এ অবস্থায় গত ২০ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে শিক্ষক কমনরুমে পৌছামাত্রই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন ও সভাপতি রফিকুল ইসলাম সোনার (৫৮) সহ অভিভাবক সদস্য মো. আতাউর রহমান (৪২), মো. মিল্লাত হোসেন (৩২), মো. আব্দুস সালেক (৬০), মোছা. নাসিমা আক্তার (২২), মো. হাসানুর রহমান (৪২), মো. মোস্তাকিম বাবু (৫০) দলবদ্ধভাবে এসে আমাকে মারধর করেন। 

এর কিছুক্ষণ পর বিষয়টি মিমাংসার জন্য  কৌশলে আমাকে নাসিমা আক্তারের বাবা আব্দুস সালেক সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর দলুয়া চৌধুরীপাড়ার বাড়িতে ডেকে নিয়ে একটি ঘরে আটকিয়ে ওই লাঞ্ছনাকারীরা সকলে আবারও মারধর করেন। এসময় আমার সাথে আসা আমার ভাগিনা জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে আমার ঠোটে ৭ টি সেলাই দিতে হয়েছে। পরের দিন এ ঘটনায় উল্লেখিতদের আসামী করে মামলা করি। এরপর থেকে আসামীরা মামলা তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। একদিকে হাইকোর্টের আদেশ অবমাননা করেছেন। অন্যদিকে বেআইনীভাবে আমাকে মারপিট করেও তারা অন্যায়ভাবে হয়রানী করছে। ফলে আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভাপতিসহ কমিটির কতিপয় সদস্য স্কুলের টাকা ব্যক্তিগতভাবে সম্পূর্ণ বেআইনী ও অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মেরে খেতে চায়। এর সাথে একমত না হওয়ায় তাঁরা আমাকে অপসারণের ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। 

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক কখনই আমার কাছে আসেনি। কাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবো। তাছাড়া এটা কমিটির কাজ। আমার বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যে অভিযোগ করেছেন। স্কুলে তাকে লাঞ্ছিত করার মত কিছুই ঘটেনি। নাসিমা বাবা আব্দুস সালেকের বাসার ঘটনা তাদের পার্সোনাল মেটার। সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবোনা।

বিদ্যালয়ের সভাপতি স্মৃতি আর্ট প্রেসের সত্বাধিকারী  রফিকুল ইসলাম সোনারের সাথে যোগাযোগ করেও তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top