কয়লা সংকটে পড়তে পারে বড়পুকুরিয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২২ আগষ্ট ২০২২, ০৭:৫২
করোনার কারনে খনি শ্রমিকদের ছুটিতে পাঠানোর ফলে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে স্বল্প পরিমানে কয়লা উৎপাদন হওয়ায় পার্শ্বস্থ কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কয়লা সংকটে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, দেশের জ্বালানীর চাহিদা মেটাতে ১৯৯৪ সালে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি প্রকল্পটি উদ্বোধনের ৯ বছর পর কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। খনি থেকে প্রাপ্ত কয়লার উপর ভিত্তি করে খনি সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে ২০০৩ সালে বড়পুকুরিয়ায় কয়লা ভিত্তিক ২৫০ (১২৫+১২৫) মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি (১নং ও ২নং) বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের কাজ শুরু হয় এবং ২০০৫ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পরবর্তীতে এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ৩নং ইউনিটের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। এখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে কয়লা সংকটের কারণে ১নং ও ৩নং ইউনিট চালু রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় দুইটি ইউনিট চালু রাখতে জ্বালানীতে ৬ হাজার মেঃটন কয়লার প্রয়োজন।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩টি ইউনিট এক সাথে চালু রাখতে দৈনিক প্রায় ৯ হাজার মেঃটন কয়লার প্রয়োজন। কিন্তু সে পরিমান কয়লা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে ৩টি ইউনিট একযোগে চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে স্বল্প পরিমানে কয়লা উৎপাদন হওয়ায় কয়লা সংকটে পড়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, করোনা পরীক্ষান্তে স্থানীয় শ্রমিকরা পর্যায়ক্রমে খনিতে কাজে যোগদান করায় কয়লা উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শনিবার (২০ আগষ্ট) কয়লা উৎপাদন হয়েছে ২৭৩১ মে.টন। এর আগে এক হাজার মে.টন উৎপাদন হচ্ছিল। আগামী দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মে.টন কয়লা উৎপাদন হবে। এখন অবস্থা অনেক ভাল।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এ এম ওয়াজেদ আলী জানান, বর্তমানে ১নং ও ৩নং ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। কয়লার অবস্থা খুব একটা ভালো না। প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার মে.টন কয়লা লাগছে। খুব একটা স্টক নেই। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বিষয়টি ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে এবং কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। এখন এ দুইটি ইউনিট থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ২নং ইউনিটের মেরামত কাজের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ডিজেল দিয়ে কখনোই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো সম্ভব না।
বিষয়: বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।