পলাতক আসামি গ্রেফতার
পরকীয়া প্রেমে বাধা: শাশুড়িকে নৃশংসভাবে হত্যা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৫৭

সময়টা ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই। লক্ষীপুর জেলায় পরকীয়া প্রেমে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিল শ্বাশুড়ি। আর এতেই নৃশংসভাবে শ্বাশুড়ির জীবন কেড়ে নেয় শারমিন আক্তার।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের প্রবাসী রুহুল আমিনের স্ত্রী জাকেরা বেগম। ২০১৪ সালে জাকেরার ছোট ছেলে আবুল বাশারের সঙ্গে বিয়ে হয় শারমিনের। শুরু থেকেই শারমিনের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক ছিল জাকেরার। ফলে সংসারে পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকতো। রাগে-দু:খে বাশার গাজীপুরে ইলেকট্রিকের কাজ নেয়। এ সুযোগ কাজে লাগায় শারমিন। বাশারের অনুপস্থিতে প্রতিবেশী জামালের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্কে। এ ঘটনায় শারমিনকে গালমন্দ আর জামালকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন শ্বাশুড়ি জাকেরা।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে শারমিন তার প্রেমিক জামালসহ শাশুড়ি জাকেরাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। শারমিনের সহযোগিতায় বালিশ চাপা দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাকেরাকে। পরে এ ঘটনাকে ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু কথায় বলে না, পাপ নাকি বাপকেও ছাড়ে না ।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন তাদের হত্যা পরিকল্পনা স্বীকার করে নেয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সহযোগী জামাল, নাজিম ও জসিমকে গ্রেফতার করা হয়।
ভিকটিমের দেবর বাদী হয়ে লক্ষীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামীরা পরে জামিনে বের হয়। এরপর যে যার মত পলাতক জীবন শুরু করে। মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অবশেষে শেষ হয় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া। ২৬ নভেম্বর ২০২২। শারমিন আক্তারসহ ৪ জনের ফাঁসির আদেশ হয় এবং অর্থদন্ড করা হয় ১০ হাজার টাকা।
আদালতের আদেশ হয় কিন্তু শারমিনতো লাপাত্তা। কিন্তু পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল শারমিনের ওপর। জীবন বাঁচাতে কখনো নোয়াখালিতে গৃহ শ্রমিক। আবার কখনো চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিক। পরে গাজীপুরে জীবিকার তাগিদে আবারও গার্মেন্টসে। এখানে আবারও নতুন প্রেম। পরে বিবাহের পরিকল্পনা। তবে আর বিয়ে করা হলোনা শারমিনের।
গেলো ৬ ডিসেম্বর ২০২২। গাজীপুরের চৌগাছা হতে র্যাব-৩ তাকে গ্রেফতার করে। অন্য আসামীরা এখনও পলাতক ।
দুপুরে র্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।