মিয়ানমার সংঘাত

কেন পাল্টে গেল ঘুমধুমের ১টি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৪:৪৫

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারে যুদ্ধের জেরে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রটি এবার বাতিল করা হয়েছে। ওই কেন্দ্রে যাদের এসএসসি পরীক্ষায় বসার কথা ছিল, তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান সোমবার গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমাদের একটি দল ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তন করেছি। নতুন দুটি ভেন্যু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। সেই অনুমোদন পাওয়ার পর বিকল্প ভেন্যু ঘোষণা করা হলো।’

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি ভালো না। গুলি-গোলা দুটোই ছুটে আসছে এপারে। প্রাণহানিও ঘটেছে।

মাইকিংয়ে স্থানীয়দের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এদিকে সোমবার সকালে তোতার দ্বীপে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফেও জেলেদের নাফ নদীতে মাছ ধরতে না যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ১২টি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনের গতকাল তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা। একজন আদালতে নিজেকে অসুস্থ দাবি করায় তাঁর রিমান্ড শুনানি হয়নি। ৬ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে এই অস্ত্রধারী রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করলে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজন আটকের পর তাঁদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। পরে মামলা হয়।

রোহিঙ্গারা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে টেকনাফের নাফ নদীতে দ্রুতগতির নৌযান নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের। এছাড়া গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম ও চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নূরে আলম মিনা ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এরপর ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অস্ত্রসহ এ দেশে ঢুকে পড়ছে—সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, এ পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী প্রবেশ করেনি। যে ২৩ জন ঢুকেছে, তাদের বিজিবি আটক করেছে। এ ঘটনায় করা মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংঘর্ষ চলছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ঢেঁকিবনিয়া ও টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিলের বিপরীতে কুমিরখালী সীমান্তচৌকি এলাকায় কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। গতকাল দুপুরে এই কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। এ সময় কোস্টগার্ড ও বিজিবি সদস্যদের সতর্ক পাহারায় থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ওপারের কুমিরখালী, শিলখালী ও বলিরবাজার এলাকায় দিনভর থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ওপারে অস্থিরতা বিরাজ করার পর থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে কয়েক দিন আগে বিজিবি ও কোস্টগার্ড ঢুকতে চেষ্টা করা কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে।

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top