বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ৫, তদন্ত কমিটি গঠন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২৪, ১২:২৮

ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া সদরে রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে পুলিশ, নেসকো, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান অলিউল্লাহ বলেন, বিকাল সোয়া ৫টার দিকে শহরের সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে।

নিহতরা হলেন- সারিয়াকান্দী উপজেলার সাহাপাড়ার বাসিন্দা বাসুদেবের স্ত্রী সবিতা (৪০), আদমদীঘি উপজেলার কন্দুগ্রাম থানার ভবানী মোহন্তের ছেলে নরেশ মোহন্ত (৬০), পুরান বগুড়ার হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা ননী কেশর সরকারের স্ত্রী অতসি রানী সরকার (৪৫), সদর উপজেলার গোহাইল মাসিন্দা এলাকার বাসিন্দা সুদেব মোহন্তের স্ত্রী রঞ্জিতা মোহন্ত (৫৫) এবং ছোট বেলঘড়িয়া এলাকার মৃত নরেন্দ্রনাথের ছেলে অলক কুমার (৪০)।

জানা গে‌ছে, বিকাল ৫টায় সেউজগাড়ী ইসকন ম‌ন্দির থেকে রথযাত্রা‌ বের হয়। পথে সেউজগাড়ী আমতলা মোড় এলাকায় স্টিলের তৈরি রথের গম্বুজ‌টি রাস্তার ওপরে থাকা হাইভোল্টে‌জের বৈদ্যুতিক তারের সংস্প‌র্শে আসে। এতে সা‌থে সা‌থে তা‌রে আগুন ধরে যায়। এ সময় র‌থে থাকা এবং আশপাশের অন্তত ৩৯ জন আহত হন। প‌রে শজিমে‌ক‌ হাসপাতা‌লে নেওয়ার পর তিনজন মারা যান।
 
 
যারা রথের উপর দাঁড়িয়েছিল এবং ঝুলে যাচ্ছিল তারাই দুর্ঘটনার স্বীকার হন বেশি। আহতদের দ্রুতই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
 
 
কেউ কিছু বোঝার আগেই নারী-পুরুষ-শিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে আবার তারা রথের কাছে এসে মাটিতে পড়া থাকা লোকজনকে উদ্ধার করেন। কিছু মানুষ তখন রথটি টেনে বনানী শিব মন্দিরের দিকে চলে যায়।

প্রতিবছরই এখানে এভাবে রথ হয়। কিন্তু এমন দুর্ঘটনা কখনও ঘটেনি। এবার কেন ঘটল তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। বগুড়ার সিভিল সার্জন শফিউল আযম বলেন, পাঁচজন মারা গেলেও এখন ৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫ জন এবং সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে পাঁচজন ভর্তি আছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, রথের চূড়ায় ধাতব পদার্থ ছিল। ১১ কিলোভোল্টের লাইনে লেগে বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। রথে উঠে যারা ধাতব পদার্থ ধরে ছিল তারাও আহত হয়। ঘটনাস্হলে গিয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনা পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারপ্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার প্রশাসন করবে। জেলা প্রশাসক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ব্যক্ত করেছেন।

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top