পাবনার ঈশ্বরদীতে আট কুকুরছানা বস্তাবন্দি করে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা
পা | প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৪
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে অমানবিকভাবে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯–এর ৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় ঈশ্বরদী ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি বেগমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন জানান, ঘটনাটি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশেই তার পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করে ঘটনাকে “অমানবিক” উল্লেখ করে বলেন, “এটি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দায়ীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
এ ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা নয়ন ও তার পরিবারকে সরকারি গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়ার লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়। ঈশ্বরদী ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন যে, মঙ্গলবারের মধ্যেই তারা বাসা খালি করে দেন।
এদিকে ঢাকা থেকে ** এনিম্যাল অ্যাকটিভিস্ট কমিটি**র একটি তদন্ত দল ঈশ্বরদীতে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নিশি আকতার কোয়ার্টার ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি দাবি করেন—
“বাচ্চাগুলো বাসার সিঁড়ির পাশে থাকতো, খুবই ডিস্টার্ব করত। তাই বাজারের ব্যাগে ভরে পুকুরের পাশে সজনে গাছের নিচে রেখে এসেছি। আমি নিজে পুকুরে ফেলিনি।”
যদিও তার ছেলে কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমকে জানায়— “আম্মু ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলেছে।”
পরে পুকুরে ভাসমান একটি বস্তা উদ্ধার করে খোলা হলে আটটি ছানাকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই ছানাগুলো নিখোঁজ ছিল। সারা রাত মা কুকুরটি আবাসিক এলাকার বিভিন্ন স্থানে দৌড়ে বেড়িয়ে চিৎকার করতে থাকে। খাবার দিলেও স্পর্শ করেনি।
সোমবার সকালে মৃত ছানাগুলো উদ্ধার হলে মা কুকুরটি প্রচণ্ড আর্তনাদ করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ এসে চিকিৎসা ও সেডেটিভ ইনজেকশন প্রয়োগ করে।
ফেসবুকে মৃত কুকুরছানার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর শহরজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নানা শ্রেণিপেশার মানুষ জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি তুলেছেন।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।