টাঙ্গাইলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে দশ বছরের শিশু
টাঙ্গাইল থেকে | প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২১, ২১:৪২
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হাসি আক্তার নামে দশ বছরের এক শিশু গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পারিবারিক সালিশে মারপিট করায় অপমান সইতে না পেরে নানার ভাড়া ঘরে ওই শিশু আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার জালাল খানের ভাড়া বাড়িতে। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে প্রেমিক মাসুম (২০) গা ডাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার রানী শংকৈল উপজেলা সদরের মো. হাসেম আলী ধীর্ঘদিন যাবত মির্জাপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের জালাল খানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। হাসেম ছাড়াও তার শ্বশুর আব্দুল হাকিম ও ভায়রা তারিকুল ইসলামও একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তারা সকলেই দিন মজুরের কাজ করেন।
একই বাসার ভাড়াটিয়া মাসুম মিয়া (২০) নামে এক কিশোরের সাথে হাসির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাতে হাসি ও মাসুমের অন্তরঙ্গের বিষয়টি খালু তারিকুল দেখে ফেলেন। ওই রাতেই পারিবারিকভাবে সালিশ হয়। ওই সালিশে হাসিকে মারপিট করে মাসুমকে সতর্ক করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান। পরে হাসিকে নানার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে হাসি ঘরের ভেতর গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এদিকে পুলিশ এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে হাসির প্রেমিক মাসুমের খোঁজ করেন। তাকে না পেয়ে স্থানীয়দের অনুরোধে হাসির খালু তারিকুল ইসলাম ও মাসুমের বন্ধু হাসান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে থানার উদ্দ্যেশে রওনা করেন।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দেওহাটা আন্ডারপাস অতিক্রম করার পর হাসান পালানোর উদ্দ্যেশে পুলিশের গাড়ি থেকে লাফ দেয়। এতে হাসান গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সেখানে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. একরামুলের পাহারায় তার চিকিৎসা চলছে বলে জানা গেছে। হাসান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার গোপিডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে। সোমবার হাসির বাবা বাদী হয়ে মাসুমকে আসামী করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন।
মুঠোফোনে হাসির বাবা আবুল হাসেমের সঙ্গে সাংবাদিক পরিচয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে এসব বিষয়ে বিরক্ত কইরেন না তো বলেই ফোন বন্ধ করে দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. একরামুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রেমিক মাসুম পালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর অনুরোধে বন্ধু হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওসি স্যারের কাছে নিয়ে আসছিলাম। পথিমধ্যে দেওহাটা এলাকায় আসার পর পালানোর উদ্দ্যেশে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়। ঢাকায় তার চিকিৎসা চলছে
এনএফ৭১/জেএস/২০২১
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।