হিটশকে চিটা হয়ে যাচ্ছে ধান

পাবনা থেকে | প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

হিটশকে চিটা হয়ে যাচ্ছে ধান, দুশ্চিন্তায় পাবনার চাটমোহরের কৃষকেরা

ধানের ফলন নিয়ে যখন আশায় বুক বেধেছিলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার কৃষকেরা, ঠিক তখন ৪ এপ্রিল মৌসুমের প্রথম ঝড়ো বাতাসের সাথে গরম হাওয়া কেড়ে নিলো কৃষকের স্বপ্ন। পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জমির ধান। এই গরম হাওয়াকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন হিটশক। এই হিটশকের ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

বেশিরভাগ জমির ধান গরম হাওয়ায় চিটা হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তারা। তবে, কৃষি বিভাগ বলছে-এই সব জমির ধান ৮০ ভাগ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলার বিলকুড়ালিয়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সবুজ ধান, এ দোলা লেগেছিল কৃষকের মনেও। ধান গাছের মাঝে কেবলই বের হয়েছিল ধানের শীষ। ধানের ফলন নিয়ে আশায় বুক বেধেছিলেন কৃষকরা।

দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধানের সমারোহ দেখে বোঝার উপায় নেই কি অবস্থা ধানের। হঠাৎ করেই গরম ঝড়ো হাওয়ায় পুড়ে গেছে ধানের শীষ। এতে জমির ধানের শীষে দেখা দিয়েছে চিটা।  ৪ এপ্রিলের গরম ঝড়ো বাতাসের পর মাঠে তেমন কিছু দেখা না গেলেও, কয়েকদিন পর জমিতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। জমির বেশিরভাগ ধান কালো হয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। তাই লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের কৃষক আজাহার শেখ জানান, তিন বিঘা জমিতে তিনি বোরো ধান রোপণ করেছিলেন। আগাছা পরিষ্কার, সেচ দেয়া, সার, কীটনাশক দেওয়া, বীজ সহ সবকিছু মিলিয়ে বিঘা প্রতি ধান রোপণে খরচ হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার টাকা। কিন্তু গরম বাতাসে জমির ধান যেভাবে চিটা হয়ে গেছে, তাতে অর্ধেক খরচ উঠবে কি না সন্দেহ। একই গ্রামের কৃষক হোসেন আলী, রশিদ, রবি কমবেশি সবাই ৩ থেকে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। তাদের কণ্ঠেও একই হতাশার সুর। ধান লাগাতে যে খরচ হয়েছে তাতে কিভাবে কি হবে বুঝতে পারছেন না তারা। করোনার মাঝে এই ধান নিয়ে আশায় বুক বেধেছিলেন তারা।

তবে আশার কথা জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এম মাসুম বিল্লাহ জানান, মূলত ৩৫ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রার বাতাসের কারণে এমন পরিস্থিতি। তবে, জমিতে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ পানি জমিয়ে রাখা ও পরিমাণ মতো পটাশ সার ¯প্রয়োগ করলে উপকার পাবেন কৃষকরা। এতে করে যেসব জমির ধানে চিটা মনে করছেন কৃষকরা, সেই জমির ধান শতকরা ৮০ ভাগ ধান পুনরুদ্ধার হবে আশা করি। এ বছর চাটমোহর উপজেলায় ৮ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে বরো ধান আবাদ হয়েছে। যা থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিকটন।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১



বিষয়: পাবনা


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top