সৈয়দপুরে করোনা চিকিৎসায় ভণ্ড কবিরাজ সুবেদার ফাঁদ

নীলফামারী থেকে আমিরুল হক | প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ০০:৩৬

সৈয়দপুরে করোনা চিকিৎসায় ভণ্ড কবিরাজ সুবেদার ফাঁদ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভণ্ড কবিরাজের প্রতারণা বেড়েই চলেছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ।

করোনাসহ সর্বরোগ সারানোর কথা বলে ওইসব ভণ্ড সাধুরা ঝাড়-ফুক, পানিপড়া আর তাবিজ-কবজ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লুটে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর তাদের এ প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করছেন তারই পাতানো স্থানীয় কয়েকজন সহযোগী।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের হাতিখানা কুদরুতউল্লাহ সড়কের মৃত আবু বক্কর সিসিদ্দকের স্ত্রী সুবেদা খাতুন (৬০)। যিনি মাস কয়েক আগেও মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন নির্বাহ করতেন। সেই সুবেদা আজ মস্ত বড় সাধু বা কবিরাজ বনেগেছেন। তিনি সর্বরোগের চিকিৎসা করেন ঝাড়-ফকু, আদা-লং পড়া আর তাবিজ-কবজ দিয়ে। তার নামডাকও ছড়িয়েছে গোটা জেলায়। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষের চিকিৎসা করে থাকেন। তবে তার চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়েছেন এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

সুবেদা খাতুন করোনাসহ বন্ধ্যা নারীদের সন্তান হওয়া, অল্প বয়সে চুল পাকা, প্রতিবন্ধী শিশুদের ভালো করা, প্রেমিক-প্রেমিকাকে পাওয়ে দেয়া, জিন-ভূত তাড়ানো, যেসব নারীদের বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে হচ্ছে না, ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক, পিত্তথলিতে পাথর, প্যারালাইস, বাতের ব্যথা, হাঁপানীও করোনাসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করেন। আর রোগের ধরন দেখে চিকিৎসার ফি নিচ্ছেন ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

এ ব্যাপারে সুবেদার কাছে শিক্ষাবিদ্যা কত দূর জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভাবের কারণে স্কুলে যেতে পারিনি। তবে এখন শুধু নাম লিখতে পারি। স্বামী মাটি কাটার কাজ করতেন। তিনি মারা যাওয়ার পর অভাবের কারণে মানুষের বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসারের ঘানি টেনেছি। এখন বাড়িতেই আসর বসিয়ে সর্বরোগের ঝাড়-ফু আর পানি পড়া দিয়ে মানুষের কাছ থেকে যে টাকা পাই তাতে আর কোন অভাব হয় না। তিনি দাবী করেন তার ঝাড়-ফুক আর আদা পড়া দিয়ে করোনা রোগীও ভালো হয়ে যাবে।

তবে সাধারণ মানুষ এখনো বুঝতে পারেনি সুবেদার কবিরাজি পুরোটাই প্রতারণা। প্রতিনিয়তই প্রশাসনের চোখের সামনে এ প্রতারণা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। দেশের আনাচে দেখা যায় কবিরাজ। গ্রাম এলাকার হাটবাজার তো বটেই শহরেও দেখা মেলে কবিরাজদের।

এনএফ৭১/আরএইচ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top