কুষ্টিয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পুত্রসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করলো পুলিশের এএসআই
কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২১, ০০:২৯
পরকীয়া প্রেমের জের ধরে কুষ্টিয়া শহরে দিনে দুপুরে পুলিশের এক এএসআই এর গুলিতে তার দ্বিতীয় স্ত্রী, তার পুত্র ও স্ত্রীর প্রেমিককে গুলি করে হত্যা করেছে। সকাল ১১টার দিকে শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার একটি মার্কেটের সমানে এঘটনা ঘটে।
অস্ত্রসহ ঘাতক এএসআই সৌমেনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন আসমা খাতুন (৩৫) কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাওতা কারিগর পাড়ার মিজবারের ছেলে প্রেমিক শাকিল (৩৪) শিশু পুত্র রবিন (৭)। কুষ্টিয়া ২শ ৫০ শয্যার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাপস কুমার সরকার জানান, আহত মহিলা ও শিশুটি ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং আহত শাকিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ১১টার পর শহরের কাস্টম মোড় এলাকায় তারা গুলির শব্দ শুনতে পান। এ সময় এক শিশুকে পেছন থেকে গুলি করলে পড়ে যায় শিশুটি। এরপর নারী ও এক পুরুষকে গুলি করে কাছ থেকে অস্ত্রধারী। এরপর মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ধাওয়া দিয়ে ওই ঘাতককে একটি বাড়ির মধ্যে আটকে রাখে। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ ওই ভবন থেকে ঘাতক এএসআইকে পিস্তলসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের আমির আলীর মেয়ে আসমা খাতুন’র সাথে মাগুরা জেলার শালিকা উপজেলার আসপা গ্রামের সুনীল রায়ের পুত্র বর্তমানে খুলনা ফুলতলায় পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত সৌমেন রায়ের সাথে দেড় বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। এর আগে আসমার দুইজন স্বামী ছিল এবং সৌমেনেরও আগে স্ত্রী ছিল।
এ অবস্থায় আসমা রবিবার শিশুপুত্রসহ তার এলাকা সাওতা গ্রামের বিকাশ কর্মী প্রেমিক শাকিলের সাথে শহরের কাস্টমস মোড়ের ডাঃ আজাদুর রহমানের ওই চারতলা বাড়ীতে আসে। এ খবর পেয়ে আগে থেকেই অবস্থান নেয়া আসমার বর্তমান স্বামী এএসআই সৌমেন রায় ওই ভবনে অবস্থান নিয়ে আসমার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আসমাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে সে দৌড়ে ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ভবনের সামনেই তাকে গুলি করে হত্যা করে। মাকে গুলি করছে দেখে শিশু পুত্রটিও দৌড়ে কাছে গেলে ঘাতক তাকেও পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করে।
এ সময় প্রেমিক শাকিলকে দেখতে পেয়ে তাকেও গুলি করে। এতে আসমা ও শিশু পুত্র রবিন ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং প্রেমিক শাকিল আহত অবস্থায় দুপুরের দিকে হাসপাতালে নিহত হয়। শিশুটি আসমার প্রথম স্বামী রুবেলের পুত্র। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এএসআই সৌমেনকে আমরা আটক করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঠিক তথ্য জানাতে পারব।’
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আটক সৌমেন রায় ফুলতলা থানার এএসআই। আজ (রবিবার) সকাল থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি ছুটি না নিয়ে আনঅফিশিয়ালি কুষ্টিয়ায় চলে গেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: কুষ্টিয়া
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।