দোয়ারাবাজারে চেলা নদীতে বালু উত্তোলনে অব্যাহত নদী ভাঙন
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থেকে | প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২১, ২০:২৭
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে সীমান্তঘেষা পাহাড়ি খরস্রোতা চেলা নদীতে সম্প্রতি ড্রেজিং পদ্ধতিতে চালু হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে ভয়াবহ ভাঙনে হুমকির সম্মুখীন নদীর উভয় তীরের ফসলি জমি, জনবসতি, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনাসমুহ।
মেঘালয় থেকে নেমে আসা খরস্রোতা ওই নদীর কুলঘেষা পূর্ব চাইরগাঁও, সারপিনপাড়া, রহিমেরপাড়া, নাছিমপুর ও সারপিননগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন স্থাপনা ইতিপূর্বে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কিন্তু চলতি ভরা বর্ষা মৌসুমে নতুনভাবে আবিষ্কৃত রাক্ষুসে যন্ত্রদানবের (ড্রেজিং মেশিন) ভয়াল থাবায় ভাঙনের তীব্রতায় ফসলি জমিসহ বাস্তুভিটা হারিয়ে নি:স্ব হওয়ার ভয়ে শঙ্কিত স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
ব্যবসার নামে বালুমহাল ইজারা এনে বেপরোয়া দাপট খাটিয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলনের মহোৎসবের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন এলাকার একশ্রেণীর বিত্তবান প্রভাবশালীরা। ফলে স্থানীয় চাইরগাঁও ক্যাম্পের বাজার, নাছিমপুর বাজার, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসহ শতাধিক পরিবারের সর্বস্ব নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন অভিজ্ঞ মহল।
নদীপাড়ের পূর্ব চাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ২০২০ সালে নদীভাঙনে আমার তিন একর জমিসহ একটি দালানঘর নদীগর্ভে বিলীন হলে ক্ষতি পুষাতে সংশ্লিষ্ট মহলে আমি অনেক দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো ফল হয়নি। এবছর আবারও নদী ভাঙনের ভয়াবহতায় শিগগির কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমাদের পুরো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করছি।
স্থানীয় স্কলার্স একাডেমীর প্রধান শিক্ষক ছামির আলী বলেন, গত বছর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ২০টি বসতভিটা, বিজিবি টহল পোস্টসহ আমাদের প্রতিষ্ঠানটি নদী গহ্বরে চলে যায়। কিন্তু আজো আমরা কোনোরূপ সহায়তা না পাওয়ায় একাডেমীর একমাত্র নিজস্ব জমিটুকু হারিয়ে এখন স্থানীয় এক ভদ্রলোকের বাড়িতে আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় নরসিংপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর উদ্দিন আহমদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ইজারাদাররা বালুমহল ইজারা এনে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিল। কিন্তু অহরহ বালু উত্তোলণ করায় নদীর গভীরতা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট ভাঙনরোধে ইজারা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করলে সেবছর ইজারা প্রদান স্থগিত থাকার পরেও নদী পার্শ্ববর্তী কয়েকটি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।