ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় বছর হল ও পরিবহন বন্ধ থাকলেও ফি বহাল
কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২১, ০৪:৪৪
গেল বছর যাবত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ফির সাথে যা ব্যবহার করে না হল ও পরিবহন তারও ফি নিয়মিত ভাবে দিতে হচ্ছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই হল, পরিবহন ও টিউশন ফি মওকুফের দাবি করে আসছেন।
তাদের দাবি - প্রায় দেড় বছর ধরে হল ও পরিবহন সেবা বন্ধ। তাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব ফি নেওয়া যুক্তিসঙ্গত নয় বলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের। শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসও দিয়েছেন। তবে অদ্যবতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে বন্ধ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অবস্থান, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। গেল জানুয়ারিতে ফি মওকুফের দাবি সম্বলিত পাঁচশ শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর জমাও দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ এবং এ বিষয়ে আলোচনা করে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে শিক্ষার্থীদের জানানো হলে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
সে সময় ইবি উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বলেন, এক বছর ক্যাম্পাসে না থেকে তারা হল ও পরিবহন ফি কেন দিবে? এ ব্যাপারে আমিও একমত। তবে ছয় মাসে প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। উল্টো চলতি বছরের শুরুতে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে (ফর্ম ফিলআপ) পরীক্ষা দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
সম্প্রতি ১২০তম একাডেমিক কমিটির সভায় ঈদুল আযহার পর আবারও পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ফি মওকুফের কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় হতাশ শিক্ষার্থীরা। তারা ফের কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইতিমধ্যে আবারও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছে ইবি শাখা ছাত্র মৈত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আক্তার হোসেন আজাদ বলেন, এবার আর আশ্বাস নয়, বাস্তবায়ন চায়।
এ ব্যাপারে ইবির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন জানান, আসলে এ বিষয়টি খুবই যৌক্তিক দাবী। কেননা হল ও পরিবহন তো আমরা ব্যবহার করি না। তার ফি কেন আমাদের গুণতে হবে। এমনিতেই ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় রয়েছে। তার উপর এমন অযৌক্তিক ফিও যদি দিতে হয় তা হলে যাবে কোথায়। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জানান, এ বিষয়টি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিয়ে সমাধান করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫ ভাগ শিক্ষার্থী অনাবাসিক হওয়ায় তারা ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ এলাকায় মেস কিংবা ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন। করোনাকালে বাড়িতে অবস্থান করেও প্রতি মাসে তাদের ভাড়ার টাকা গুণতে হচ্ছে। এছাড়া ইবি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সহযোগিতা পাননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য। এটা অবশ্যই বিবেচনার যোগ্য, বিবেচনার দাবি রাখে। আমি তো এককভাবে করতে পারব না। অফিস খুললে আলোচনা করে যতটুকু পারা যায় করব।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: কুষ্টিয়া
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।