দুর্নীতিতে চাম্পিয়ন শিক্ষা কর্মকর্তা
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৪, ১৫:১২
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দূর্ণীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় শিক্ষকরা। তারা বলেছেন, এই কর্মকর্তার চাহিদা পূরণ না করলে লাঞ্চনার শিকারও হতে হয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় শিক্ষকরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পত্নীতলা উপজেলার বড়ইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক গৌর চন্দ্র মোহন্ত বলেন, আমাদের স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের সময় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এটিএম জিল্লুর রহমান নিজেই প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, নির্বাচনের আগেরদিনও আমরা কেউ জানতে পারলাম না যে, কাল আমাদের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তৈরী করা পকেট কমিটির সভাপতি শ্যামল মহন্ত ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার দাস (জুনিয়র শিক্ষক) এর নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির তফসিল গোপন রেখে এই কমিটি তৈরী করেছেন।
শুধু তাই নয় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক, নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ্য প্রহরী ও আয়া পদে মোটা অংকের নিয়োগ বানিজ্য করার জন্য শিক্ষা অফিসারের সাথে লিয়াজু মেন্টেন করে আমাকে তার (শিক্ষা অফিসার) অফিসে ডেকে নিয়ে জোর জরস্তি ভাবে সাদা কাগজে সাক্ষর নিতে চায়। সাদা কাগজে সাক্ষর না দেওয়ার অপরাধে তখন থেকেই আমার বিল বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তী তে জানতে পারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমানের নির্দেশে বিভিন্ন কাগজপত্রে আমার সাক্ষর জাল করে বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বড়ইল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু তার তদন্ত আজ পর্যন্ত হয়নি।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, পত্নীতলা উপজেলার উত্তরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিচির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এর সাথে লিয়াজু মেন্টেন করে অত্র বিদ্যালয়ের শূণ্য পদ সমূহের উপর মামলা থাকা অবস্থায় নিয়োগ দেবার পায়তারা করেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। শুধু তাই নয় নজিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও লিয়াজু মেন্টেন করে রাতের আধারে পকেট কমিটি গঠন করে দিয়েছেন তিনি। যে পকেট কমিটির সভাপতি ওবাইদুল ইসলাম মিন্টুর বিরুদ্ধে স্থানীয়রা নারী কেলেঙ্কারীসহ বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুকশর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, আমাদের শিক্ষকতার বয়সে এই রকম খারাপ দূণীতিবাজ অফিসার দেখিনি। নিয়োগবোর্ডে মোটা প্রতিটি নিয়োগ প্রতিটি তিনি ১৫-২৫ হাজার করে টাকা নিয়ে থাকেন। যদি কেউ টাকা কম দিতে চায় তাহলে তাকে বিভিন্ন ধরণের হুতমি ধামকি দিয়ে টাকা আদায় করেন।
অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: লুৎফর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আমার জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।