অশ্লীলতার প্রতিবাদে চলচ্চিত্র ছেড়েছিলেন শাকিল খান
বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৮
ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক শাকিল খান দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা জগতের বাইরে। ১৯৯৪ সালে ঢালিউডে পদার্পণ করে ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া তাঁর প্রথম ছবি ‘আমার ঘর এই বেহেশত’ দিয়েই নজর কাড়েন দর্শকদের। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকাকালীন সময়েই তিনি চলচ্চিত্র ছেড়ে দেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সিনেমা ছাড়ার কারণ খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেন এই নায়ক। শাকিল বলেন,
“আমি তখন লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতাম, সিনেমাও ভালো ব্যবসা করছিল। কিন্তু আশপাশে অশ্লীলতার ছায়া দেখতে পেলাম; নিজেকে ওই স্পর্শে যেতে দিতে পারিনি। মানুষের সামনে আমার কী উত্তর থাকবে? সন্তানদের কী বলব? সে কারণেই ক্যারিয়ারের সময়েই সিদ্ধান্ত নিয়ে চলচ্চিত্র ছেড়ে দিয়েছি।”
শুধু তাই নয়, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও এর নির্বাচনী ব্যবস্থাকেও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর ভাষায়,
“শিল্পী সমিতির নির্বাচন একটা ফালতু জিনিস। এটা শিল্পীদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছে। এখন সমিতিতে যারা আছে, তারা দুইটা সিনেমা করেই নিজেকে শিল্পী বলে দাবি করে— অথচ আমরা তাদের চিনি না।”
বর্তমান সময়ে ‘সুপারস্টার’ উপাধি দেওয়ার প্রবণতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শাকিল খান। তিনি বলেন,
“এখন যে কেউ নিজেকে সুপারস্টার বলে দাবি করছে। আমার এক ঈদে ১৬টা সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল, তবু আমি নিজেকে সুপারস্টার বলিনি। শাবানা, রাজ্জাকরা কখনো এসব তকমা নিয়ে ভাবতেন না।”
বর্তমান সময়ের আলোচিত অভিনেতা শাকিব খান সম্পর্কেও মন্তব্য করেন তিনি।
“শাকিবের কদর আছে, তিনি নিচ্ছেন। কোটি টাকার ওপরে নেয়— না, অর্ধকোটা থেকেও কম জানি। কিন্তু বিষয়টা পারিশ্রমিক নয়; চলচ্চিত্র বাঁচাতে বহুমুখী উদ্যোগ নিতে হবে। এক শাকিব নয়, আরো অভিনেতা তৈরি করতে হবে।”
এছাড়া ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
“চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের মানুষরাই শত্রুতে পরিণত হয়। যারা আপনাকে নিয়ে কাজ করেছিল, পরে তারাই আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ কারণেই আমরা সালমান শাহের মতো নক্ষত্রকেও হারিয়েছি।”
রাজনীতি নিয়েও নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন শাকিল খান। তিনি বলেন,
“আমি হাজার কোটি টাকা আয় করি না, কিন্তু এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আমার রাজনীতি হলো মানুষের জন্য কাজ করা, গালাগালি নয়।”
বর্তমানে ব্যবসা ও পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই একসময়কার রোমান্টিক হিরো। তাঁর একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রয়েছে। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী, মেয়ে সামিকা ও বড় ছেলে সাদমান— এদের নিয়েই এখন তাঁর সুখী সময় কাটছে।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।