পাশ না করেও আইনজীবী, বিচারপতির ছেলের সনদ স্থগিত থাকবে: আপিল বিভাগ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২২ আগষ্ট ২০২২, ০৩:৩৬
আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ এক বিচারপতির ছেলে ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকী। তার সনদ স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। তবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গেজেট প্রকাশ বৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধেও আপিল করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে উভয়পক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে জুম্মন সিদ্দিকীর হাইকোর্টের আইনজীবী সনদ স্থগিতই থাকবে।
রোববার (২১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। জুম্মন সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। বার কাউন্সিলের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু।
এরআগে, ৭ আগস্ট আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গেজেট প্রকাশ বৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষ হয়।
২০২০ সালের ৮ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গেজেট প্রকাশ বৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিটকারীরা। আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত রয়েছে।
এর আগে, ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশটি দেন। এই বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি তারিক উল হাকিম আপিল বিভাগে পদোন্নতি পাওয়ায় রুলটি বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চে শুনানি হয়।
২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেননি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মন সিদ্দিকী। অথচ ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।