দেশে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত হওয়ার পর থেকে অনেক মামলার রায় প্রকাশে দেরি হচ্ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে আসামিরা সাজা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকার ফলে বিচারকেরা রায় প্রদানে আরও সতর্ক হয়ে গেছেন, কারণ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘বিয়ন্ড রিজনেবল ডাউট’ ভিত্তিতে অপরাধ প্রমাণিত হওয়া আবশ্যক।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার সৈয়দ ইজাজ কবির মনে করেন, রায় হলে শাস্তি কার্যকর করতেই হবে। তবে মৃত্যুদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার আগে প্রতিটি বিষয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ কেউ করলেই সেটি সত্যি প্রমাণিত হয়ে যায় না। আদালতে অপরাধকে সন্দেহের ঊর্ধ্বে গিয়ে প্রমাণ করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে তদন্ত প্রতিবেদন, পুলিশি রিপোর্টসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি ও ম্যানিপুলেশনের কারণে বিচার প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠছে।
ব্যারিস্টার ইজাজ আরও বলেন, বাংলাদেশে ফৌজদারি অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন, বিশেষ করে দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশে। তদন্ত প্রতিবেদন নির্ভরযোগ্য নয়, পুলিশের বক্তব্য সময়ের সঙ্গে পাল্টে যায়, ফলে বিচারকদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে।
তিনি মনে করেন, সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার জন্য বিচার ব্যবস্থা ও তদন্ত সংস্থাগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করা জরুরি। বিচারক নিয়োগ, তদন্ত এবং পুলিশি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না গেলে ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা কঠিন হবে।
বিচার বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার দুর্বলতাকে চিহ্নিত করেন এবং বলেন, আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে, বিচার প্রক্রিয়াকে দুর্নীতিমুক্ত ও নিরপেক্ষ করতে হবে। তা না হলে ন্যায়বিচার পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। সূত্র: জনকণ্ঠ
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।