ঈদে কি খাবেন?
রাশেদ রাসেল | প্রকাশিত: ৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:২৬
ঈদুল ফিতর আসছে সামনে। আর বাকি কয়েক দিন। ঈদে কি খাবেন আর কি খাবেন না?
সবার বাসাতেই কমবেশি ভালো খাবার রান্নার বিষয়টি আলোচনায় আসে। বাড়িতেই বা কেন? অনেক সময় অন্যের বাড়িতেও দাওয়াতে যেতে হবে। শাহী খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাবে আর একটু অসুস্থতার কথা তো ভাবতেই হয়।
অনেকের ভাবনা ঈদে লম্বা এক ছুটি আসছে। কাজও তেমন নেই। ভালো খাওয়া-দাওয়া বা অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে গেলে তো ওজন বাড়ার সংকট থাকেই। বাড়তি ওজনটাই এখন সবার সমস্যা। কিন্তু ঈদের উৎসবে কিন্তু সচেতনভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণের সদিচ্ছা ধরে রাখা যায় না। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ কিং সৌদ মেডিক্যাল সিটির পুষ্টিবিদ নৌরা আল ফেদা অবশ্য মনে করেন এ সদিচ্ছা ধরে রাখা কঠিন কিছুই নয়। আপনাকে অবশ্যই ভালোভাবে কিছু চর্চার কথা ভেবে নিতে হবে। সেগুলো কি? এ বিষয়ে তার পরামর্শ দেখে নেওয়া যাক:
সংযমের বাঁধ ভাঙার সময়?
সারামাস রোজা রাখার ফলে এক ধরনের অভ্যাসে ছিলেন। এবার আনন্দ, উল্লাস উদযাপনের সময়। বাড়িতেও অনেক মজার মজার রান্না হচ্ছে। এসব খাবার থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখতে তো কেউ বলেনি। খাবেন পরিমিত পরিমাণে, ক্যালরি মেপে ও আপনার শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী। মনে রাখবেন, বেশি খেলে তা হজম না হয়ে শরীরে চর্বি হয়ে জমা হবে। ওজন বাড়বে। কম ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়ার দিকেই মনোযোগ দিন বেশি।
আরেকটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কখনোই খুব বেশি ক্ষুধার্ত অবস্থায় থাকা যাবে না। দিনে ঘন ঘন খান, তবে কম করে খান। খিদে বেশি লাগলে অন্য হিসেব। সবসময় ভরপেট না খেয়ে কিছুটা ক্ষুধা রেখে খান। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর আবার খেয়ে দেখুন। বারে বারে কিন্তু পোলাও কোর্মা খাবেন না। অথবা বেশি গুরুপাক বা শাহী খাবার খাবেন না। সকালে যদি সাধারণ নাস্তা খান, দুপুরে রিচ ফুড খেলেন অল্প। বিকালে আবার কম খেলেন, যেমন: চা, বিস্কুট, ফল ইত্যাদি। রাতে কিন্তু কম খাবেন। যেমন: ভাতের বদলে রুটি, সবজি বা সবজির সুপ ও মাছ ইত্যাদি। প্রতিদিন রিচ ফুড খাবেন না।
গরমে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেনগরমে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
বাছাই করুন
সুস্থ থাকতে চাইলে কোন খাবার টা খাবেন আর কোনটা খাবেন না তা আপনাকেই বেছে নিতে হবে। প্রতিদিন সব গ্রুপের খাবার — শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, ফ্যাট, মিনারেল আমাদের দরকার। তেলে ভাজা, বেশি তেল মশলা দিয়ে রান্না করা গুরুপাক খাবার , মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন, এতে বদহজম তো হবেই, রোজ রোজ খেলে ওজন বেড়ে, ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। কাবাব, গ্রিল করা খাবার, সালাদ, ফল, রুটি ইত্যাদি রাখবেন আপনার খাবারের মেন্যুতে। সালাদ, ফল, সবজি খেয়ে পেট ভরান। গুরুপাক খাবারের সাথে প্রচুর সালাদ ও সবজি খান।
দাওয়াতে গেলে
দাওয়াতে গেলে বেশি বেশি খাবেন না। পরিমিত খান। মিষ্টি খাবার না খেয়ে ফল খেতে পারেন। অল্প পরিমাণে মিষ্টি খেতে পারেন। দাওয়াতে গেলে খাবার দিকে মনোযোগ না দিয়ে গল্প করা ও সবার সাথে কুশল বিনিময় করার দিকে মনোযোগ দিন। খাওয়ার পরে টক দই খেলে ভালো হজম হয়, বোরহানিও হজমে সহায়ক। এছাড়া পুদিনা লাছিও হজমের জন্য খুব ভালো একটি পানীয়। কোমল পানীয় না খেয়ে ডাবের পানি, বোরহানি, লেবুর শরবত খান। পর পর অনেক বাসায় বেড়াতে গেলে সব বাসায় এক চামচ করে খান বা খুব অল্প পরিমাণে খান। কম ক্যালরি যুক্ত খাবার বা ফল খান।
পানীয়ের ক্ষেত্রে
লেবু চর্বি দূর করার জন্য খুব ই ভালো কাজ করে। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে একটু লেবু চিপে খেলে সারাদিন সেটা আপনাকে চর্বি দূর করতে সাহায্য করবে। লেবু মধু পানীয় ও একই কাজ করবে। এছাড়া, লেবু চা, লেবু দিয়ে সবুজ চা খেলে, তা মেটাবলিসম বাড়িয়ে খাবার হজমে সহায়ক হবে। তবে চা খাবেন খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে।
পানির অনেক গুণ
পানি হজমে সহায়ক, যেকোনো খাবারই বেশি পানিতে হজম হয়ে যাবে। গুরুপাক খাবার খেলে তাই অনেক অনেক পানি খাবেন, খারাপ লাগবে না। বেশি বেশি পানি আপনার ত্বকের জন্যও ভালো। ঈদ এর তিন দিন আগে থেকে অনেক পানি খান, ঈদ এর মৌসুমে আপনাকে অনেক সজীব দেখাবে। কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি বাড়িয়ে ১২/১৪ গ্লাস করুন। খাওয়ার আগে পানি খেয়ে নিন, দেখবেন আর বেশি খেতে ইচ্ছা করবে না।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।