জীবিত রাজিয়া সুলতানা জাতীয় পরিচয় পত্রে মৃত
কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশিত: ১৩ আগষ্ট ২০২১, ১৯:১১
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মোসাম্মৎ রাজিয়া সুলতানা জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয় পত্রে তিনি এখন মৃত।
জাতীয় পরিচয় পত্রে মৃত থাকার কারণে করোনাভাইরাস এর ভ্যাকসিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাকে। বারবার রেজিস্ট্রেশনের জন্য চেষ্টা করা হলেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
রাজিয়া সুলতানা জানান, রেজিস্ট্রেশন করতে ব্যর্থ হলে তিনি বুঝতে পারেন তার আইডি কার্ডে জটিলতা রয়েছে। এরপর এক প্রতিবেশী কথায় তিনি বুঝতে পারেন সমস্যা সমাধানের জন্য তাকে জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে যেতে হবে। তারপর তিনি ছুটে যান কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী তিনি এখন মৃত।
তিনি আরো জানান, ২০০৭ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ভোট দিয়েছেন। তাছাড়া গত ১০ বছর ধরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় অফিশিয়াল কাজ তিনি এই আইডি কার্ড দিয়েই করে যাচ্ছেন।
রাজিয়া বলেন, এই কার্ড সংশোধন না হলে তিনি করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করতে পারবেন না। এজন্য তিনি দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনযাপন করছেন। জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় থেকে তাকে বলা হয়েছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর থেকে একটি জীবিত থাকার প্রত্যয়ন পত্র সহ আবেদন করতে। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যয়ন পত্রটি সংগ্রহ করে ইতিমধ্যে আবেদন পত্র সহ জমা দিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে। তিনি খুব দ্রুত বিষয়টির সমাধান চেয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিন মন্ডল বলেন, রাজিয়া সুলতানা এখনোও জীবিত আছেন। তাকে পরিষদ থেকে আমরা একটা প্রত্যয়ন দিয়েছি। কীভাবে তিনি জীবিত থেকেও মৃত হলেন সেটা নির্বাচন অফিস বলতে পারবেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইদুর রহমান বলেন, রাজিয়া সুলতানা ভোটার তালিকায় মৃত থাকায় সংশোধনের জন্য একটি আবেদন করেছেন। আমরা ইতিমধ্যে তার মৌখিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান করে তাকে পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারব।
ভুক্তভোগী সূত্রে আরো জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর শেখপাড়া গ্রামে ১৯৮৮ সালের ২৩মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মোঃ খাদেমুল ইসলাম এর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের দরুন তিনি স্বামীর বাড়িতে এসে ওঠেন। এরপর থেকে এখানে তার সবকিছু এবং এখান থেকেই তিনি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে তাঁকে মৃত দেখানো হয়েছে।
কিভাবে একজন জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো হয়েছে সেটি জানতে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টির কোনো সদুত্তর মেলেনি।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: কুষ্টিয়া
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।